বান্দরবানে পর্যটকের ঢল, খালি নেই হোটেল-মোটেল
টানা ছুটিতে ভ্রমণপিপাসুদের ভালো সাড়া পেয়েছেন বান্দরবানের হোটেল-মোটেল ব্যাবসায়ীরা। আগামী ২৩ ও ২৪ ডিসেম্বরের সাপ্তাহিক ছুটি এবং ২৫ তারিখ বড়দিনের ছুটিতে অগ্রিম হোটেলের কক্ষ বুকিং দিয়েছেন পর্যটকরা। এতে ২৩ ডিসেম্বর তারিখে বান্দরবান শহরের অধিকাংশ হোটেলের সব কক্ষ বুকড হয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে কয়েকটি হোটেল ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ হোটেল পর্যটকের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে। কক্ষ পেতে ব্যাগপত্র নিয়ে এক হোটেল থেকে অন্য হোটেলে ছোটাছুটি করতেও দেখা যায় বেশকিছু পর্যটককে।
হোটেল ব্যাবসায়ীরা জানান, বান্দরবানে সারাবছর পর্যটকের আনাগোনা থাকলেও নভেম্বর, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে তা কয়েকগুণ বাড়ে। ফলে এসময়টাতে ভালো ব্যবসার অপেক্ষায় থাকেন তারা। কিন্তু চলতি বছরে নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসের অধিকাংশ সময় পার হয়ে গেলেও তেমন পর্যটকের সাড়া ছিল না। তবে সাপ্তাহিক ও বড়দিনের ছুটি মিলে এই তিনদিনের টানা ছুটিতে আশানুরূপ পর্যটকের সাড়া পেয়েছেন তারা। এর মধ্যে শুক্রবারের জন্য অধিকাংশ হোটেলের শতভাগ কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে। এছাড়া আগামী ২৪ ডিসেম্বর ৮০ শতাংশ ও ২৩ ডিসেম্বর প্রায় ৬০ শতাংশ কক্ষ অগ্রিম বরাদ্ধ নিয়ে রেখেছেন বান্দরবান ভ্রমণপ্রত্যাশীরা।
হোটেল হিল্টনের ম্যানেজার মো. আক্কাস উদ্দীন জানান, শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) হোটেলের সব কক্ষই অগ্রিম বরাদ্ধ নিয়ে রেখেছেন ভ্রমণপ্রত্যাশীরা। এছাড়া টানা এই তিনদিনের ছুটিতে ২৪ ডিসেম্বর ৮০ শতাংশ ২৩ ডিসেম্বর ৬০ শতাংশ কক্ষ বুকিং হয়েছে।
হোটেল গ্র্যান্ড ভ্যালির ম্যানেজার মো. সুমন জানান, তার হোটেলেও ২৩ ডিসেম্বর শতভাগ কক্ষ পরিপূর্ণ। এছাড়া ২৪ ও ২৫ ডিসেম্বরও ভালো পর্যটকের সাড়া রয়েছে।

হোটেল হিলভিউয়ের ফ্রন্টডেক্স ম্যনেজার মো. লিমন সরকার বলেন, ২৩ ডিসেম্বর শতভাগ, ২৪ ডিসেম্বর ৮০ শতাংশ ও ২৫ ডিসেম্বর ৬০ শতাংশ কক্ষ অগ্রিম বুকিং নিয়েছেন ভ্রমণপ্রত্যাশীরা।
হোটেল গার্ডেন সিটির স্বত্বাধিকারী মো. জাফর উল্লাহ বলেন, ১৬ ডিসেম্বরের পর থেকে পর্যটকের ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। ২৩ ও ২৪ ডিসেম্বর হোটেলের কোনো কক্ষ খালি নেই।
এই দুইদিন বান্দরবান ভ্রমণপ্রত্যাশীদের হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বা আবাসন নিশ্চিত করে ভ্রমণের পরামর্শ দেন তিনি।
বান্দরবান হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি অমল কান্তি দাশ জাগো নিউজকে বলেন, দীর্ঘদিন মন্দাভাব শেষে আগামী ২৩, ২৪ ও ২৫ ডিসেম্বর টানা ছুটি উপলক্ষে ভালোই পর্যটকের সাড়া পাওয়ার কথা জানিয়েছেন হোটেল ব্যাবসায়ীরা। ২৩ ডিসেম্বর অধিকাংশ হোটেলের শতভাগ কক্ষ অগাম বুকিং দিয়ে রেখেছেন বান্দরবান ভ্রমণপ্রত্যাশীরা।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাধারণত সন্ধ্যার পর বান্দরবান ভ্রমণকারীদের তেমন বিনোদনের অবকাশ থাকে না। ফলে হোটেলে কিংবা রাস্থায় ঘোরাঘুরি করে সময় কাটাতে হয়। বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সংশ্লিষ্টদের সম্মতিক্রমে পর্যটক মৌসুমে বান্দরবান সদর এলাকার কোনো একটি নির্দিষ্ট স্থানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
বান্দরবান টুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত সুপার নকিবুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, বান্দরবান ভ্রমণে আগত পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা দিতে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রত্যেক পর্যটন স্পটে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাদা পোশাকেও পুলিশ নিয়োজিত থাকবে।
নয়ন চক্রবর্তী/এমআরআর/জিকেএস