৪ ডিসেম্বর ফুলছড়ি হানাদারমুক্ত দিবস


প্রকাশিত: ০৯:৩২ এএম, ০৪ ডিসেম্বর ২০১৪

আজ ৪ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে গাইবান্ধার জেলার ফুলছড়ি থানা পাকিস্তানি হানাদারমুক্ত হয়। এই দিনে সেখানে উত্তোলন করা হয় স্বাধীন বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা।

পাকিস্তাানি হানাদারবাহিনীকে পরাজিত করতে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গৌতম চন্দ্র মোদকের নেতৃত্বে ৩ ডিসেম্বর গভীররাতে মুক্তিযোদ্ধা সামছুল আলম, নাজিম উদ্দিন, আব্দুল জলিল তোতা, এনামুল হকসহ অন্য মুক্তিযোদ্ধারা ৪টি দলে বিভক্ত হয়ে ফুলছড়ি থানার আশপাশে অবস্থান নেয়।

পরদিন ৪ ডিসেম্বর ভোরে গেরিলা কমান্ডার সামছুল আলমের দলটি সর্বপ্রথম ফুলছড়ি থানা (পুলিশ স্টেশন) আক্রমণ করে উপর্যুপরি গ্রেনেড হামলা ও গুলি বর্ষণ শুরু করলে অপর ৩টি দলের মুক্তিযোদ্ধারাও চারিদিক থেকে গোলা বর্ষণের মাধ্যমে পাক সেনাশিবিরের দিকে এগুতে থাকে। মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই হানাদারবাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।

মুক্তিযোদ্ধারা থানার অস্ত্রাগারের সমুদয় অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিজেদের আয়ত্বে নিয়ে নেয়। এ সময় পাকসেনাদের একটি দল ক্যাম্প থেকে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের উপর দিয়ে উত্তর দিকে পালিয়ে যাওয়ার সময় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এনামুলের দলের মুখোমুখি হয়। ফলে উভয় দলের মধ্যে সম্মুখ যুদ্ধ শুরু হয়। ঘণ্টাব্যাপী সংগঠিত এ যুদ্ধে ২২ পাকসেনা নিহত এবং ৫ বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা হলেন, আফজাল হোসেন, কবেজ আলী, যাহেদুর রহমান বাদল, ওসমান গণী এবং আব্দুস সোবহান।

পরদিন ৫ ডিসেম্বর সকালে ওই ৫ বীরের মরদেহ গরুর গাড়ী যোগে সাঘাটা থানার সগুনা ইউনিয়নের খামার ধনারুহা স্কুল প্রাঙ্গনের দক্ষিণ পশ্চিম কোনে নিয়ে এসে সমাহিত করা হয়। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে এ পাঁচ বীর শহীদের সম্মানে সগুনা ইউনিয়নের নাম পরিবর্তন করে মুক্তিনগর ইউনিয়ন রাখা হয়।

পাঁচ শহীদের সম্মানে তাদের কবরের পাশে নির্মিত হয়েছে স্মৃতি সৌধ ও মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স। দিবসটি উপলক্ষে ফুলছড়ি ও সাঘাটার মুক্তিযোদ্ধারা আলোচনা সভা, শহীদদের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও মিলাদ মাহফিলে আয়োজন করা হয়েছে।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।