শ্রেণিকক্ষ দখল করে মাদরাসা সুপারের বসবাস

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ফরিদপুর
প্রকাশিত: ০৮:৫৬ এএম, ৩১ জানুয়ারি ২০২৩

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার যদুনন্দি বাজার সংলগ্ন জগজ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার ইব্রাহিম হুসাইন প্রতিষ্ঠানটির কয়েকটি শ্রেণিকক্ষ দখল করে দীর্ঘদিন বসবাস করছেন। সেখানে শুধু বাসবভনই নয়, শ্রেণিকক্ষ দখল করে চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়িক কার্যক্রমও। রাখা হয়েছে ঠিকাদারি কাজে ব্যবহৃত মালামাল।

ইব্রাহিম হুসাইন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বর্ণি ইউনিয়নের গিমাডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা।

স্থানীয় ও মাদরাসা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের যদুনন্দী বাজার সংলগ্ন এলাকায় ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় জগজ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা। প্রতিষ্ঠানটিতে সালথা ও পাশের বোয়ালমারী উপজেলার কয়েকটি গ্রামের প্রায় চার শতাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। এছাড়া ১৬ জন শিক্ষকসহ ২০ জন শিক্ষক-কর্মচারী আছেন। মাদরাসাটি ২০২০ সালে এমপিওভুক্ত হয়।

jagonews24

দেখা যায়, জরাজীর্ণ পরিবেশের মধ্যে অবস্থিত মাদরাসাটি। এরমাঝেই একটি শ্রেণিকক্ষ দখল করে খাট, আলমারি, সোফাসহ বসবাসের বিভিন্ন আসবাবপত্র রেখেছেন মাদরাসা সুপার ইব্রাহিম হুসাইন। এটিই তার শয়নকক্ষ। অপর একটি শ্রেণিকক্ষে সহ-সুপার কেরামত আলী বসবাস করেন। এছাড়া আরও একটি শ্রেণিকক্ষ তালাবদ্ধ দেখা যায়। সেখানেই মাদরাসা সুপারের ঠিকাদারি কাজের মালামাল ও যন্ত্রাংশ রাখা হয়েছে। তবে তালাবদ্ধ রুমটি তিনি খুলে দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং নানা টালবাহানা শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি জানান, রুমটির চাবি তার কাছে নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা বলেন, সুপার ইব্রাহিম হুসাইন নিজের ইচ্ছামতো মাদরাসাটি পরিচালনা করেন। তার কথামতো এখানে সবকিছু হয়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মাদরাসাটিতে পরিবার, আত্মীয়-স্বজনসহ বসবাস করে আসছেন। মাদরাসার লাইব্রেরিতে বসেই ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করেন তিনি। মহাসিন খান নামে তার এক ভাই এখানে এসে রাত্রিযাপন করেন। দুই ভাই মিলেই ঠিকাদারি কাজ করেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, মাদরাসার অনেক কাজই তিনি কারও সঙ্গে পরামর্শ না করেই করেন। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। শিক্ষকদের সঙ্গেও তিনি দুর্ব্যবহার করেন।

jagonews24

মাদরাসার কক্ষে বসবাসের বিষয়ে জানতে চাইলে সুপার ইব্রাহিম হুসাইন বিষয়টি স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, আমি মাদরাসার শুরু থেকে এখানেই বসবাস করে আসছি। মাঝে মাঝে গভীর নলকূপ স্থাপনের কাজ করতাম। এখন কিছু করি না। সেজন্যই পুরোনো কিছু মালামাল রুমে রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে সালথা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিনয় চাকী জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ আমাকে অবগতও করেননি। এছাড়া এমপিওভুক্ত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষ দখল করে বসবাসের কোনো সুযোগ নেই।

সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আক্তার হোসেন শাহিন বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে দ্রুত খোঁজ-খবর নেওয়া হবে। কোন আইনে তিনি মাদরাসায় বসবাস করেন আমার জানা নেই। এ বিষয়ে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এন কে বি নয়ন/এমআরআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।