ইউপি নির্বাচন : নির্বাচন থেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন বিএনপি কর্মীরা


প্রকাশিত: ০৫:৩১ এএম, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে তৃণমূলের মতামত উপেক্ষিত হয়েছে খুলনা জেলা বিএনপিতেও। এ নিয়ে ক্ষোভ ও হতাশায় ভুগছে বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। তাদের অভিযোগ হাইব্রিড নেতাদের সুপারিশে ডুমুরিয়া, দিঘলিয়া, তেরখাদাসহ বেশ কিছু উপজেলায় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এর ফলে তৃণমূলের নেতারা যাদের জন্য সুপারিশ করেছেন তাদের মনোনয়ন না দিয়ে দেয়া হয়েছে ‘অযোগ্য’ নেতাদের।

খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন, এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ, এমনকি কেন্দ্রীয় কমিটিকে এসব অভিযোগ করেও তারা কোনো ফল পায়নি। ফলে হতাশ হয়ে পড়েছেন বিএনপির কর্মীরা। অধিকাংশ ইউনিয়নে নির্বাচনী কার্যক্রম থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন তারা। ফলে এসব ইউনিয়নে বিএনপির ভরাডুবির আশংঙ্কা করা হচ্ছে।  

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নে এবার আগে থেকেই মাঠে নামে জেলা বিএনপি। খুলনার ৯টি উপজেলার নেতাকর্মীদের সাক্ষাতকার নেয়া হয়। শুধু রূপসা, তেরখাদা ও দিঘলিয়া এলাকায় প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেয়া হয় ওই আসনের বিএনপির সংসদ সদস্য প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় নেতা শাহ কামাল তাজের মতামত।

সূত্রটি জানায়, কেন্দ্র থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রদানের পর দেখা যায় বেশ কিছু ইউনিয়নের তৃণমূল থেকে যাদের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে, তারা মনোনয়ন পাননি। এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী নেতারা।

গত বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে দিঘলিয়া উপজেলা বিএনপির নেতারা জানান, গাজীরহাট ইউনিয়নে প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে বড় ধরনের অনিয়ম হয়েছে। তারা জানান, গাজিরহাটে বিএনপির মনোনয়নের জন্য তৃণমূল থেকে সুপারিশ করা হয়েছিল উপজেলা কমিটির সহ-সভাপতি মোল্লা বেলাল হোসেনের নাম। কিন্তু কেন্দ্রে গিয়ে সেটা পাল্টে যায়। মনোনয়ন পান সৈয়দ নাসির উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি।

বিএনপি নেতারা জানান, গত ১৩ বছরে নাসির উদ্দিন এলাকায় পা দেননি। বিএনপির সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক, এমনকি প্রাথমিক সদস্য পদও তার নেই। অথচ শাহ কামাল তাজের হস্তক্ষেপে তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ মোল্লা বেলাল হোসেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন। কিন্তু কাজ না হওয়ায় নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে তিনিসহ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্য নেতারা।

একই ঘটনা ঘটেছে তেরখাদা উপজেলার ছাগলাদহ ইউনিয়নে। ওই ইউনিয়নে তৃণমূল থেকে মনোনয়নের জন্য প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল মারুফ খানকে। গত নির্বাচনে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন তিনি। কিন্তু বিএনপির মনোনয়ন দেয়া হয়েছে মনজুরুল হাসান দারুকে। তার সঙ্গে সরকারি দলের সখ্যতার অভিযোগ আছে। এসব কারণে ওই ইউপি নির্বাচনে দলীয় কর্মীরা নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন।

একই ধরনের অভিযোগ উঠেছে ডুমুরিয়া উপজেলার সাহস ও ভান্ডারপাড়া ইউপিতে। সেখানে তৃণমূলের মতামত পাল্টে গেছে কেন্দ্রে গিয়ে।

এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম মনা বলেন, মনোনয়ন নিয়ে তৃণমূলে কিছু ক্ষোভ আছে। এসব ক্ষোভ অপসারণের চেষ্টা চলছে।

আলমগীর হান্নান/এসএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।