ভবন নেই নীলফামারীর ৭ ইউনিয়ন পরিষদে

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নীলফামারী
প্রকাশিত: ০৯:০২ পিএম, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

নীলফামারীর ছয় উপজেলার ৬০ ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ৭টি ইউনিয়নে নেই কমপ্লেক্স ভবন। পরিত্যাক্ত, জরাজীর্ণ ও অপরিসর কক্ষে কোনোমতে চলছে দৈনন্দিন সেবা কার্যক্রম। এতে জনপ্রতিনিধি ও পরিষদের কর্মীদের যেমন সমস্যায় পড়তে হয় তেমনি ভোগান্তি পোহাতে হয় সেবা গ্রহীতাদেরও।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলার জলঢাকা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের জরাজীর্ণ ভবনে প্রতি বছর রঙের প্রলেপ দিয়েও ঢাকা যাচ্ছে না ভঙ্গুর দশা। স্যাঁতস্যাঁতে দেওয়াল, খসে পড়ছে পলেস্তারা। বৃষ্টি হলেই রুমের ভেতরে জমে যায় পানি। প্রায় এক যুগ আগে ভবনটি পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হলেও সেখানেই চলছে যাবতীয় কার্যক্রম। ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা ও সচিব বসছেন একই রুমে। ফলে সেবা প্রদানে ঘটছে বিঘ্ন।

jagonews24

আরও পড়ুন- রানি এলিজাবেথের ভ্রমণ করা বিলাসবহুল রেলকোচ এখন ‘জাদুঘর’

একই অবস্থা সদর উপজেলার ইটাখোলা, কচুকাটা, জলঢাকা উপজেলার খুটামারা, ডোমার উপজেলার ভোগডাবুড়িসহ ৭টি ইউনিয়নের। নতুন ভবন না থাকায় ইউনিয়ন পরিষদে সঠিক সময়ে দেখা মিলছে না উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা, ভেটেনারি সহকারী, ইউনিয়ন সমাজকর্মীসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের।

এদিকে নীলফামারী সদরের ইটাখোলা ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম চলছে দুই কক্ষবিশিষ্ট একটি ভবনে। নেই গ্রাম আদালত। ছোট একটি কক্ষে কোনো রকমে চলছে ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্রের কার্যক্রম। চেয়ারম্যান, সচিব ও সদস্যদের আলাদা বসার কথা থাকলেও এক কক্ষেই বসতে হয় সবাইকে। এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদ ভবন না থাকায় জন্ম ও মৃত্যুসনদ, নাগরিকত্ব সনদ, ভোটার আইডিকার্ড সংশোধনসহ নানা দাপ্তরিককাজে সেবাপ্রাপ্তিতে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।

jagonews24

আরও পড়ুন- কৃষিতে বাড়ছে উৎপাদন ব্যয়, মিলছে না ন্যায্যমূল্য

ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নের আকরাম হোসেন বলেন, একই কক্ষে সব সেবা। আমার মেয়ের জন্ম নিবন্ধনের জন্য এসে প্রায় দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হলো। এক রুমে যত মানুষের ভিড়। এখানে ভবন থাকলে হয়ত দুর্ভোগটা পোহাতে হতো না। আমাদের জোর দাবি এখানে একটি আধুনিক ভবন দেওয়া হোক।

ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. হামিদুর রহমান বলেন, ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটি দীর্ঘদিনের পুরোনো ভবন। এই ভবনের মাল রাখার গোডাউনের ওপর ছাদ খুলে পড়েছে। চেয়ারম্যানের রুমে একটু বৃষ্টিতেই পানি জমে। উদ্যোক্তা, সচিব একই রুমে বসি। এছাড়াও প্রতিটি রুমে পানি জমে। খুব কষ্ট করে সেবা দিচ্ছি। তারপরও জনগণকে যে সেবা দেওয়া দরকার তা হয়ত দিতে পারছি না। সরকারের কাছে অনুরোধ নতুন ভবন যদি দেয় তাহলে এই ইউনিয়নের মানুষ কাঙ্ক্ষিত সেবা পাবে।

jagonews24

আরও পড়ুন- পরিযায়ী পাখিতে মুখর নীলসাগর

ইটাখোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হেদায়েত আলী শাহ্ ফকির বলেন, ইটাখোলা ইউনিয়ন পরিষদের ভবন অত্যন্ত জরুরি ও প্রয়োজনীয়। ভবন না থাকার কারণে এই ইউনিয়নে কাঙ্ক্ষিত সেবা আমরা জনগণকে দিতে পারি না। আমরা যখন ভিজিএফ দিতে যাই তখন সবথেকে বড় সমস্যায় পড়ি। যেহেতু জেলা শহর থেকে এই পরিষদটি অত্যন্ত কাছে সেহেতু আমার বিনীত আবেদন অতি দ্রুত এখনে একটি ভবন দেওয়া হোক।

নীলফামারী স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (উপসচিব) সাইফুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের ভবন না থাকায় কাঙ্ক্ষিত সেবা প্রদান ও গ্রহণে কিছুটা বিঘ্ন ঘটছে। যে সকল ইউনিয়নে ভবন নেই সেগুলোর স্টিমেশন করে পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন এলে আমরা ভবন নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

রাজু আহম্মেদ/এফএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।