ছাড়া পেয়েই গৃহবধূর চুল কেটে নিলো ইভটিজিং মামলার আসামিরা


প্রকাশিত: ০৮:২০ পিএম, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

কুষ্টিয়ার খোকসায় ইভটিজিং মামলার আসামিরা থানা থেকে ছাড়া পেয়ে মামলার বাদীকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে মাথার চুল কেটে মুখে চুন-কালি মাখিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে নির্যাতন চালিয়েছে। এখানেই ক্ষান্ত হয়নি, গৃহবধূকে রাস্তার পাশে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখেও নির্যাতন চালানো হয়েছে। পরে দুই শিশুপুত্র ও তাদের খেলার সাথী আহত মাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।


জানা গেছে, সোমবার সকালে থানা থেকে ছাড়া পাওয়া প্রভাবশালী তৈহিদ ও সুমনসহ আটজন উপজেলা সদরের হিলালপুর গ্রামের হতদরিদ্র গৃহবধূ তিন সন্তানের জননী ইভটিজিং মামলার বাদী সামেলা খাতুনকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। কয়েক’শ লোকের সামলে গৃহবধূর বাড়ির পাশের মসুরের ক্ষেতের মধ্যে নিয়ে গিয়ে উপর নির্যাতন চালায়। এক পর্যায়ে তার মাথার চুলও কেটে দেয়া হয়।


পরে স্থানীয় বিএনপি নেতা ও সাবেক মেম্বার আশকার আলীর বাড়ির সামনে একটা গাছের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা বেঁধে রেখে নির্যাতন চালানো হয় ওই গৃহবধুকে। প্রায় এক ঘণ্টা পর গৃহবধূর দুই শিশু ছেলে স্বাধীন, রাকিব ও তাদের খেলার সাথী সীমা খাতুন নামের এক শিশু গৃহবধূকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। গৃহবধূর স্বামী মিন্টু শেখ যশোরের একটি ইটভাটার শ্রমিক।


হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গৃহবধূ সামেলা জানায়, গত কয়েকদিন আগে হামলাকারী তৈহিদ, সুমনসহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে থানায় তিনি ইভটিজিংয়ের অভিযোগ করেন। এ ঘটনার পর রোববার রাতে পুলিশের এসআই কার্তিক চন্দ্র আসামিদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়।


সোমবার আসামিরা থানা থেকে ছাড়া পেয়ে তার বাড়িতে হামলা চালায়। তাকে চুলের মুঠি ধরে টানতে টানতে মাঠের মধ্যে নিয়ে গিয়ে শারীরিক নির্যাতন চালায়। পরে তার মাথার চুল কেটে দেয়। এ ছাড়া তার সমস্ত শরীরে চুন ও কালি মাখিয়ে উল্লাস করতে থাকে। সদর রাস্তার পাশে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে নির্যাতন চালানো হয়। খোকসা থানা পুলিশ নির্যাতিতা ওই গৃহবধূর কাছ থেকে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর করে নেয়।


প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, নির্যাতনের সময় শুধু তৈহিদ-শরিফুল নয় স্থানীয় ইউপি সদস্য জিয়াও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। হামলাকারীদের ভয়ে কেউই গৃহবধূকে উদ্ধারে এগিয়ে আসেননি। ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশের এসআই কার্তিক চন্দ্রের সঙ্গে সাংবাদিকদের দেখা হয়। তিনি আসামিদের ছেড়ে দেয়ার কথা স্বীকার করেন। এখন আবার মামলা নিয়ে তিনি আসামিদের গ্রেফতার করা হবে বলে জানায়।

আল-মামুন সাগর/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।