জুস খেয়ে শিশুর মৃত্যু, পুলিশ হেফজতে মা
স্কুলে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফেরার পথে কিনে আনা জুস খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে রহিত দত্ত (১১)। এক পর্যায়ে মুখে ফেনা উঠতে থাকে তার। তাৎক্ষণিক তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে নানা ঘটনার জন্ম হয়েছে। নিহত রহিত দত্ত সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা সদরের নকিপুর (হরিতলা) গ্রামের মৃত গোপাল দত্তের ছেলে। নিহতের ঘরের পাশের ড্রেন থেকে একটি বিষের প্যাকেট উদ্ধার হয়েছে। সন্দেহের জেরে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে শিশু রহিতের মা সুস্মিতা দত্তকে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পরকীয়ার কারণে জুসের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে একমাত্র সন্তান রহিত দত্তকে (১১) হত্যা করেছেন মা সুস্মিতা।
শুক্রবার (১৭ মার্চ) দুপুরে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা সদরের নকিপুর (হরিতলা) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রহিত নকিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র।
স্থানীয়রা জানান, চার বছর আগে স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে রহিতকে নিয়ে মনোজিত মন্ডল নামে স্থানীয় এক শিক্ষকের বাসায় ভাড়া থাকতেন সুস্মিতা দত্ত।
রহিতের মেজ কাকা উজ্জল দত্ত জাগো নিউজকে জানান, শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে রহিতের মা ছেলের অসুস্থতার বিষয়টি মুঠোফোনে পরিবারের সদস্যদের জানান। এ সময় দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাদেরকে জানান, বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার পথে কিনে আনা জুস খেয়ে ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এক পর্যায়ে মুখ দিয়ে ফেনা উঠে শরীর নিস্তেজ হতে শুরু করলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রহিতের অপর কাকা বিশ্বনাথ জাগো নিউজকে জানান, খাদ্যে বিষক্রিয়ায় রহিতের মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকরা নিশ্চিত করলে তারা পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। এ সময় ঘরের পাশে ড্রেন থেকে একটি বিষের প্যাকেট উদ্ধার করেন।
তিনি অভিযোগ করেন, পরকীয়ায় জড়িয়ে বিশেষ কোনো কারণে রহিতকে তার মা হত্যা করে থাকতে পারে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অবস্থানকালে রহিতের মা জানান, বাইরে থেকে নিয়ে আসা জুস খেয়ে রহিত অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ সময় তাকে খাবার স্যালাইন খাওয়ানোর পর গোসল করিয়ে শুইয়ে দিলে সে বমি শুরু করে। একপর্যায়ে মুখ দিয়ে ফেনা উঠলে আত্মীয়-স্বজনকে খবর দিয়ে ছেলেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
শ্যামনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, মৃতদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার মাকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রহিতের মা ইঁদুর মারার জন্য বাসায় বিষ রাখার কথা জানিয়েছেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
আহসানুর রহমান রাজীব/এফএ/এএসএম