নীলফামারী
পরিবহন শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ, ৪ ঘণ্টা পর যান চলাচল
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নীলফামারীর সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচলের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। তবে বিআরটিএ সিদ্ধান্ত অমান্য করে পৌর শহরের বাইরে অটোরিকশা স্ট্যান্ড করায় সৈয়দপুরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করেছেন জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার (১৬ মে) বিকেলে এ অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেন তারা৷ এতে আন্তঃজেলাসহ দূরপাল্লার সব যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুর্ভোগে পড়েন সৈয়দপুর বিমানবন্দরে বিমানের প্রায় পাঁচ শতাধিক যাত্রী ও ঢাকাগামী শতাধিক যাত্রী।
রাত ৯টার দিকে সিএনজি মালিক সমিতি বিআরটিএর সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন পরিবহন শ্রমিকরা। এতে চার ঘণ্টা পর সারাদেশের সঙ্গে নীলফামারী জেলাসহ দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়ের যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এর আগে বিকেল ৫টার দিকে একই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সড়ক অবরোধ করে ডিমলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন। এছাড়াও নীলফামারী জেলা শহরে সড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা।
জেলা মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে নীলফামারীর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বিআরটিএর এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জনগণের স্বার্থে সৈয়দপুর থানার সামনে থেকে চলমান অটোরিকশা স্ট্যান্ড সরিয়ে সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে চলাচলের সিদ্ধান্ত হয়।
তবে বিআরটিএর সিদ্ধান্ত অমান্য করে অটোরিকশাগুলো কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের পরিবর্তে সৈয়দপুর বাইপাস মহাসড়কের ওয়াপদা মোড় থেকে নীলফামারী পৌর শহরে চলাচলের নির্দেশনা দেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সৈয়দপুর সার্কেল) সারোয়ার আলম। সে নির্দেশনা অনুযায়ী সৈয়দপুর ওয়াবদা মোড় এলাকায় অটোস্ট্যান্ড চালু করেন চালক ও মালিকরা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের একক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে অবরোধ শুরু করেন বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা।
এ বিষয়ে জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রশীদ জাগো নিউজকে বলেন, বিআরটিএ সিদ্ধান্ত তোয়াক্কা না করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম একক সিদ্ধান্ত দিয়ে ওয়াবদা মোড় থেকে অটোরিকশা চলার নির্দেশনা দেন। এটা বিআরটিএকে অসম্মান করা হয়েছে। এ জন্য ইউনিয়নের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অবরোধ করা হয়েছে।
জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, বিআরটিএর সিদ্ধান্ত অমান্য করে একজন পুলিশ কর্মকর্তা স্ট্যান্ডবাজি করেছেন। তিনি একক সিদ্ধান্তে ওই সভার গৃহীত পদক্ষেপ বাস্তবায়ন না করে অটোরিকশা চালকদের পক্ষ অবলম্বন করেছেন। জনগণের স্বার্থে সৈয়দপুর পৌর শহর থেকে সৈয়দপুর-চিলাহাটি রুটের বাস স্টপেজ সরিয়ে টার্মিনালে নেওয়া হয়েছে। তেমনি শহরের ভেতর থেকে অটোস্ট্যান্ড সরিয়ে বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে ওই রুটে চলাচল করবে বলে বিআরটিএ সিদ্ধান্ত হয়। তবে তিনি (পুলিশ কর্মকর্তা) এখানে বিআরটিএর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না করে এক পক্ষ নেওয়ায় শ্রমিকরা অবরোধ করেন।
তিনি আরও বলেন, বিআরটিএ সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন সবাই। সেই আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়েছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সৈয়দপুর সার্কেল) সারোয়ার আলম। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক এবং সংগঠনের নেতাদের দাবির মুখে পৌর শহরের বাইরে থেকে তাদের চলাচল করতে বলা হয়েছে। এতে সিএনজি সংগঠনের পক্ষ অবলম্বন করার অভিযোগটি সত্য নয়। এটা ভুল বোঝাবুঝি।
রাজু আহম্মেদ/এসজে/জেআইএম