শিশু আকাশের যন্ত্রণা যেন আর সহ্য করা যাচ্ছে না

এমদাদুল হক মিলন এমদাদুল হক মিলন , দিনাজপুর
প্রকাশিত: ০৫:১৩ পিএম, ১৭ মে ২০২৩

দিনাজপুরের বিরল উপজেলায় পাঁচ বছরের শিশু আকাশের শরীরে অজ্ঞাত এক চর্মরোগ বাসা বেঁধেছে। দূরারোগ্যে এই চর্মরোগের চিকিৎসা করতে দিনমজুর বাবা-মা রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন।

শিশু আকাশ বিরল উপজেলার ৮নং কামদেবপুর ইউনিয়নের বনগাঁও পূর্বপাড়া বাঁধসংলগ্ন এলাকার দিনমজুর জুয়েল-আরজিনা দম্পতির ছোট ছেলে।

জানা যায়, আরজিনা-জুয়েল দম্পতির দুই ছেলে। তাদের বড় ছেলে সুস্থ স্বাভাবিক হলেও ছোট ছেলে আকাশের এক মাস বয়স থেকেই গায়ে অজ্ঞাত চর্মরোগ বাসা বাঁধতে শুরু করে। পর্যায়ক্রমে হাত-পা-গলাসহ পুরো শরীরে তা ছড়িয়ে পড়ে। তার শরীরে ফাঙ্গাসের মতো দেখা যায়, যা সব সময় চুলকায়। বর্তমানে খসখসে ও সাদা-কালো দাগ ধারণ করেছে রোগটি। ছোট্ট শিশুটি এই রোগের কারণে ঠিকমতো ঘুমাতেও পারে না।

দিনমজুর বাবা জুয়েল ও তার মা আরজিনা দীর্ঘ ৫ বছর ধরে সন্তানের চিকিৎসা করাতে ডাক্তার, কবিরাজ, হাকিম সবার কাছে ছুটেছেন কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। দিনদিন তা বেড়েই চলেছে। শিশু আকাশের যন্ত্রাণা যেন আর সহ্য করা যাচ্ছে না।

চর্মরোগে আক্রান্ত আকাশের মা আরজিনা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, তার স্বামী দিনমজুরের কাজ করে কোনোভাবে সংসার পরিচালনা করেন। দুটি ছেলে সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে স্কুলে পড়ে। ছোট ছেলে আকাশ জন্মের এক মাস যেতে না যেতেই শরীরে চর্মরোগের দেখা মেলে। প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসক, কবিরাজের কাছে নিয়ে যান। পরে শীররের বিভিন্ন স্থানে চর্মরোগ ছড়িয়ে পড়লে তাকে দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ শহরের বিভিন্ন ক্লিনিকের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চিকিৎসা করান। তবে অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসা করা সম্ভব হয়নি। দীর্ঘ ৫ বছর সন্তানের চিকিৎসার যোগান দিতে গিয়ে দিনমজুর বাবা আজ নিঃস্ব। তার পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

তিনি বলেন, আমি নিজেও বাড়িতে সেলাইয়ের কাজ করি। সেলাই থেকে যা পাই চিকিৎসার যোগান দিতেই চলে যায়। অর্থের অভাবে সন্তানের চিকিৎসাও ঠিকমতো করা হয় না।

এ বিষয়ে বিরল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আবদুল মোকাদ্দেস বলেন, এই অজ্ঞাত চর্মরোগের পরীক্ষা-নীরিক্ষা ও চিকিৎসা দিনাজপুরে সম্ভব নয়। ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে যোগাযোগ করা হচ্ছে। শিশু আকাশকে চিকিৎসার জন্য সেখানে পাঠানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি বলেন, কেউ দায়িত্ব নিলে তাহলেই কেবল শিশুটির উন্নত চিকিৎসা সম্ভব। নতুবা সম্ভব হচ্ছে না। শিশুটির চিকিৎসার ব্যাপারে তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ সমাজের দানশীল বিত্তবান, হৃদয়বান, সম্পদশালী, সমাজসেবকদের নিকট সহযোগিতা কামনা করেন।

এফএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।