কোটি টাকা নিয়ে সমিতির সভাপতি উধাও

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি ঈশ্বরদী (পাবনা)
প্রকাশিত: ০৫:০৩ পিএম, ১৮ মে ২০২৩

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছেন বন্ধন বাণিজ্যিক সমিতির সভাপতি সহাদেব কর্মকার (৪২)। তিনি ব্যবসায়ীদের অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে উপজেলার জয়নগর শিমুলতলা মোড়ের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে দুই ও এক বছর মেয়াদি এ সমিতি গঠন করেন।

স্থানীয়রা জানান, সহাদেব কর্মকার উপজেলার মানিকনগর গ্রামের গুরুপদ কর্মকারের ছেলে ও শিমুলতলা মোড়ে গ্রামীণ জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী। সোনার ব্যবসার পাশাপাশি তিনি বন্ধন বাণিজ্যিক নামে সঞ্চয় সমিতি খোলেন। ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে দুই শতাধিক সদস্য সমিতিতে অন্তর্ভুক্ত করেন। এ সমিতিতে দুই বছরে এক কোটি টাকার বেশি সঞ্চয় হয়।

সমিতির সদস্য চয়ন খান বলেন, সমিতির সদস্যদের অনেকের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় লভ্যাংশসহ সঞ্চয়ের টাকার জন্য সহাদেবকে বলেছেন। তিনি ফেরত দেওয়ার নামে প্রায় এক মাস ধরে সময়ক্ষেপণ করছিলেন। ১৪ মে কিছু সদস্যের সঞ্চয়ের টাকা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এখন আর তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার মোবাইল ফোন বন্ধ। বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। পরিবারের লোকজন বলছে, তিনি কোথায় গেছেন কেউ জানে না।

সমিতির আরেক সদস্য মিন্টু সরকার বলেন, ৮২ হাজার টাকা সঞ্চয় রেখেছি। মেয়াদ পূর্ণ হলেও সঞ্চয় ও লভ্যাংশের টাকা একাধিকবার ফেরত চেয়েও পাইনি।

অন্য সদস্য গ্রাম চিকিৎসক কমল সরকার বলেন, আমার দেড় লাখ টাকা জমা আছে। সব গ্রাহকের টাকা মিলে কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

অভিযুক্ত সহাদেব কর্মকারের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার ফোন বন্ধ। তবে সহাদেব কর্মকারের স্ত্রী মিতা রানী সরকার বলেন, সহাদেব বাড়িতে নেই। কোথায় গেছেন বলে যাননি।

সলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) আসাদুল হক আশা জাগো নিউজকে বলেন, সমিতির টাকা আত্মসাৎ করে সহাদেবের পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমি লোকমুখে শুনেছি। টাকার পরিমাণ কতো তা সঠিক জানি না।

সলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ বাবলু মালিথা জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। সদস্যদের টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ নিয়ে আসেনি। তবুও আমি খোঁজ নিয়ে দেখবো।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাসুদ রানা জাগো নিউজকে বলেন, বন্ধন বাণিজ্যিক সমিতি নামে কোনো সঞ্চয় সমিতির নিবন্ধন নেই। নিবন্ধন ছাড়াই অবৈধভাবে এ সমিতি গঠন করা হয়েছে।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার জাগো নিউজকে বলেন, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ নিয়ে আসেননি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেখ মহসীন/এসজে/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।