জয়পুরহাট হাসপাতাল

জ্বালানির বরাদ্দ শেষ, দেড় মাস ধরে বন্ধ অ্যাম্বুলেন্স

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি জয়পুরহাট
প্রকাশিত: ০৬:৩০ পিএম, ২০ মে ২০২৩

দেড়শ শয্যাবিশিষ্ট জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালের চারটি অ্যাম্বুলেন্স প্রায় দেড় মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে রোগীদের বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া নিয়ে প্রায় দ্বিগুণ খরচ করতে হচ্ছে। জ্বালানি তেল কেনার বরাদ্দ না থাকায় অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে (২০২২-২৩) হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সের জ্বালানি খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২৪ লাখ টাকা। এর আগে এই বরাদ্দ দিয়েই সারাবছর চলতো। কিন্তু এবার বরাদ্দ পাওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই জ্বালানির দাম বৃদ্ধি পায়। আর সেই বেশি দামে জ্বালানি তেল কেনার কারণে চলতি অর্থবছর শেষ হওয়ার তিন মাস আগেই বরাদ্দের টাকা শেষ হয়ে যায়। এ অবস্থায় মার্চ মাসে কিছুটা চললেও গত ৮ এপ্রিল থেকে জ্বালানির অভাবে পুরোপুরি অ্যাম্বুলেন্সসেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সচালক খায়রুল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আমরা সেই এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে বসে আছি। তেলের বরাদ্দ না থাকায় আমরা অ্যাম্বুলেন্স চালাতে পারছি না।

জ্বালানির বরাদ্দ শেষ, দেড় মাস ধরে বন্ধ অ্যাম্বুলেন্স

তিনি জানান, সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে প্রতি কিলোমিটারে ১০ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়। সেই হিসাবে জয়পুরহাট থেকে বগুড়ার নির্ধারিত ভাড়া ১ হাজার ২০০ টাকা, রংপুরের ভাড়া ২ হাজার ৪০০ টাকা, দিনাজপুরের ভাড়া ১ হাজার ৮২০ টাকা, রাজশাহীর ভাড়া ২ হাজার ৬৪০ টাকা ও ঢাকার ভাড়া ৬ হাজার ৮০০ টাকা।

হাসপাতালের আরেক অ্যাম্বুলেন্সচালক কাজল জাগো নিউজকে বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাকিতে জ্বালানি কিনতে রাজি না হওয়ায় আমরা গাড়ি চালাতে পারছি না। সেই গত ৮ এপ্রিল থেকে আমাদের এই অ্যাম্বুলেন্সসেবা একদম বন্ধ রয়েছে।

জ্বালানির বরাদ্দ শেষ, দেড় মাস ধরে বন্ধ অ্যাম্বুলেন্স

সদর উপজেলার হালট্রি গ্রামের এনামুল হক জাগো নিউজকে বলেন, আমার মা হাসপাতালে ভর্তি। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে হবে। আমি সেজন্য অ্যাম্বুলেন্স খুঁজছি। কেউ সাড়ে তিন হাজার টাকা চাচ্ছে, আবার কেউ তিন হাজার চাচ্ছে। অথচ সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া মাত্র এক হাজার ২০০ টাকা।

তিনি বলেন, হাসপাতালের সরকারি অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ থাকায় অন্য অ্যাম্বুলেন্স খুঁজতে হচ্ছে।

পাঁচবিবি উপজেলার রতনপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আমার খালা হাসপাতালে ভর্তি। গতকাল তাকে রেফার্ড করলে ঢাকায় নেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া নেয় ৯ হাজার ৭০০ টাকা। কিন্তু সরকারি ভাড়া দেখলাম ছয় হাজার ৮০০ টাকা।

তিনি বলেন, আমার খালা গরিব মানুষ। কিন্তু কী করার; সরকারি অ্যাম্বুলেন্সসেবা না থাকায় আমাদের এই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

জ্বালানির বরাদ্দ শেষ, দেড় মাস ধরে বন্ধ অ্যাম্বুলেন্স

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সরদার রাশেদ মোবারক জাগো নিউজকে বলেন, জ্বালানি তেলের বরাদ্দ না থাকায় অ্যাম্বুলেন্সসেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সে কারণেই আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, এরইমধ্যে ৫৫ লাখ টাকা জ্বালানির বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চাহিদা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ আসলে আবারও অ্যাম্বুলেন্সসেবা চালু করা হবে।

এমআরআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।