বাবার মরদেহ আনতে যাওয়ার পথে প্রাণ গেলো ছেলের

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে বাবার মৃত্যু সংবাদ শুনে মরদেহ আনতে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় ছেলে নিহত হয়েছেন। সোমবার (৫ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়নে মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সড়কে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে।
সোলায়মান সরদার নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়নের চান্দনী নদীর পাড় এলাকার মৃত সোহরাব সরদারের ছেলে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বার্ধক্যজনিত কারণে সোহরাব সরদারের মৃত্যু হয়। তার চার ছেলে-মেয়ের মধ্যে সোলায়মান বড় ও ছোট ছেলে জলিল সরদার কৃষি কাজ করেন। দুই মেয়ে রাবেয়া আক্তার ও নুরুন্নাহারের বিয়ে দিয়েছেন তিনি।
নিহতদের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে বাবা সোহরাব সরদার বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। তাই দুবাই প্রবাসী ছেলে সোলায়মান সরদার বাবাকে দেখতে বাড়ি এসেছিলেন। সোলায়মান সরদারের স্ত্রী শামিমা বেগম ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বাবার মৃত্যুর ৩০ মিনিটের মধ্যে ছেলের মৃত্যুতে পরিবারের সবাই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।
নিহতদের স্বজন ফরহাদ শেখ বলেন, সোহরাব সরদার অসুস্থ হওয়ার পর তাকে আমরা হাসপাতালে ভর্তি করলে আজ দুপুর ১টা ১০ মিনিটে তিনি মারা যান। মৃত্যুর সময় সোলায়মানের স্ত্রী শ্বশুরের কাছে ছিলেন। স্ত্রীর কাছে বাবার মৃত্যু সংবাদ শুনে সোলায়মান গাড়ি না পেয়ে হেঁটে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা হন। মজিদ জরিনা স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও পল্লী বিদ্যুতের অফিসের মাঝামাঝি সড়কে এলে পেছন থেকে একটি মোটরসাইকেল তাকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই সোলায়মান মারা যান।
তিন বলেন, সোহরাব সরদারের মরদেহ বাড়িতে নিয়ে গেছেন অন্যরা। আমরা সোলায়মানের মরদেহ ময়নাতদন্ত হলে বাড়িতে নিয়ে যাবো। তারপর একসঙ্গে বাবা-ছেলের জানাজা শেষে দাফন করা হবে।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার শারমিন আক্তার বলেন, সোহরাব সরদার বার্ধক্যজনিত কারণে হাসপাতালে মারা যাওয়ার পর আমাদের কাছে তার ছেলেকে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসা হয়। সোলায়মান সড়ক দুর্ঘনায় মারা যাওয়ার কারণে তার মরদেহ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নড়িয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, মজিদ-জরিনা স্কুলের সামনে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার অভিযোগে সৌরভ দেবনাথ নামে একজনকে গ্রেফতার করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে পালং থানা পুলিশ। সৌরভের বাড়ি নড়িয়ার মসুরা এলাকায়। সৌরভের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন। সোলায়মানের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে মূল ঘটনাটি বেরিয়ে আসবে।
এফএ/এমএস