ছাত্রলীগের ছেলেদের থামতে বলায় ওসিকে বকলেন এমপি

দায়িত্বরত অবস্থায় মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুজ্জামানকে জনসমক্ষে বকাবকির অভিযোগ উঠেছে মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃণালকান্তি দাসের বিরুদ্ধে।
ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে বুধবার (৭ জুন) বিকেলে মুন্সিগঞ্জের ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, ছাত্রলীগ সদস্যরা স্লোগান দেওয়ার সময় ওসি তারিকুজ্জামান তাদের থামতে বলার পরই এ ঘটনার সূত্রপাত।
ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন এমন কয়েকজন জানান, বুধবার বিকেলে মুন্সিগঞ্জে ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপের উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। সেখানে দায়িত্ব পালন করছিলেন সদর থানার ওসি তারিকুজ্জামান। জাহিদ আহসান অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করার সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা স্লোগান দিচ্ছিলেন। এসময় ওসি তারিকুজ্জামানকে তাদের বিরত থাকতে বলতে দেখা যায়।
এসময় আকস্মিক ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এমপি মৃনাল কান্তি দাস। পরে ওসিকে বকাবকি করেন। এসময় এগিয়ে এসে প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল ও মুন্সিগঞ্জ পৌর মেয়র ফয়সাল বিপ্লব এমপিকে থামানোর চেষ্টা করে করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মুন্সিগঞ্জ পৌর মেয়র ফয়সার বিপ্লব বলেন, ‘ঘটনাটি সত্য। অনেক মানুষের সামনে ঘটনাটি ঘটেছে। লোকজন দেখছিল। বিষয়টি খারাপ লাগায় আমি দায়িত্ব মনে করে সংসদ সদস্যকে থামানোর চেষ্টা করি। নয়তো আরও বিশৃঙ্খলা হতো। যতই হোক একজন ইউনিফর্ম পরিহিতকে কেউ বকাবকি করলে তার প্রতি সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধাবোধ থাকবে না। কিছু বাজে ছেলেপেলে ছিল, তারাও আশকারা পেতো। সবমিলিয়ে আমার মনে হয়েছে থামানোর দরকার তাই এগিয়ে গিয়ে থামিয়েছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী জেলা ছাত্রলীগের এক নেতা বলেন, ‘প্রতিমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে আমরা দলীয় বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিলাম। এসময় ওসি এসে আমাদের ধমক দিচ্ছিলেন। আমাদের ধমকানোর বিষয়টি এমপি মহোদয় দেখতে পেয়ে ওসিকে ধমকাতে নিষেধ করেন। এইটুকুই। অন্য কিছু হয়নি।’
এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ওসি তারিকুজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আর আমি কাউকে ধমকি দেইনি। প্রতিমন্ত্রী মহোদয়কে প্রোটোকল দেওয়া হচ্ছিল, সেখানে অন্য কাউকে ধমক দেবো কেন? এটি পুলিশের কাজ না। আমি যথারীতি দায়িত্ব পালন করছিলাম।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে রাজি না। মুন্সিগঞ্জের মানুষ জানে আমি কেমন।’
আরাফাত রায়হান সাকিব/এসআর/জেআইএম