কিশোরীর প্রেগন্যান্সির ভুল রিপোর্ট, তদন্তে কমিটি
নীলফামারীর ডোমার উপজেলায় ১৩ বছরের এক কিশোরীর গর্ভবতী হওয়ার ভুল প্রতিবেদন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জেনারেল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামের একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই ক্লিনিক বন্ধের দাবি তুলেছেন ভুক্তভোগী কিশোরীর স্বজন ও স্থানীয়রা।
সোমবার (১২ জুন) দুপুরের উপজেলা পরিষদ এলাকায় ক্লিনিকটি অবরোধ করেন তারা। এর আগে এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রোববার বিকেলে পেটে ব্যথা নিয়ে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যায় ১৩ বছরের কিশোরী। পেট ব্যথার ফলে ক্লিনিকে আলট্রাসনোগ্রাফি ও ইউরিন পরীক্ষা করায় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। আলট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্টে কিশোরীকে গর্ভবতী দেখানো হয়। তবে পরিবারের লোকজনের সন্দেহ হলে তারা আরও দুটি ক্লিনিকে আলট্রাসনোগ্রাফি করেন। সেখানে রিপোর্ট স্বাভাবিক আসে। এতে ক্ষোভে সোমবার ওই ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার অবরোধ করে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের দাবি জানান স্বজন ও স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে শিশুটির মামা বলেন, ‘এ অবস্থায় আমরা প্রথমে খুব ভেঙে পড়েছিলাম। বাচ্চাটিও পাগলের মতো হয়ে গিয়েছিল। আমরা তাকে নানাভাবে বোঝাচ্ছি সে একদম ভেঙে পড়েছে। এমন অবস্থায় আমার সন্তানের ভবিষ্যৎ অন্ধকার করে দিলো তারা। সে এখন স্বাভাবিকভাবে চলতে পারবে না। সবাই আঙুল তুলবে তার দিকে। আমি এর বিচার চাই। একই সঙ্গে ক্লিনিকটি বন্ধ চাই।’
শিশুটির বোন বলেন, ‘আমরা ঘটনার দিন থেকে বোনকে পাহারা দিচ্ছি৷ সে আত্মহত্যারও চেষ্টা করেছে। আমি এর উপযুক্ত শাস্তি চাই।’
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে জেনারেল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ডাক্তার নেহারঞ্জন সাহা আলট্রাসনোগ্রাফিটি করেন। ইউরিন টেস্ট করেছেন আমাদের প্যাথলোজি ট্যাকনোলোজিস্ট লক্ষণ রায়। তারা উভয়ে মিলে রিপোর্টটি দেয়। হয়তো কোথাও ভুল ছিল। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
ডাক্তার নেহারঞ্জন সাহা বলেন, ‘মেশিনের সমস্যার কারণে আলট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্ট ভুল হতে পারে।’
টেকনোলোজিস্ট লক্ষণ রায় বলেন, ‘আমি ওই কিশোরীর প্রস্রাব পরীক্ষা করিনি। হয়তো ক্লিনিকের অন্য কেউ করেছে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রায়হান বারী জাগো নিউজকে বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির তদন্ত রিপোর্ট পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজু আহম্মেদ/এসজে/জিকেএস