সবার সহযোগিতায় বাঁচতে চান ব্রেইন ক্যানসারে আক্রান্ত সোহাগ
ছোটবেলা থেকেই অভাব অনটনের মধ্যে বড় হয়েছেন সোহাগ মাতুব্বর (৩০)। বিয়ের পর প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়েও তার কষ্টের শেষ নেই। অন্যের জমিতে কাজ করে যা মজুরি পেতেন তাই দিয়ে চলতো সংসার। কিন্তু হঠাৎ এক বছর আগে প্রথমে ব্রেইন টিউমার ও পরে ক্যানসার ধরা পড়লে চারদিকে অন্ধকার নেমে আসে তার।
গ্রামের মানুষের সহযোগিতায় টিউমার অপারশেন শেষে বেশ কয়েকটি রেডিওথেরাপি দিতে হয়। তবে তাকে এখনো আরও কয়েকটি রেডিওথেরাপি দিতে হবে। কিন্তু চিকিৎসার টাকা তো দূরের কথা ঠিকমতো খাবার কেনার টাকাও এখন তার হাতে নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের সিদ্দিকখোলা এলাকার মৃত আলান মাতুব্বরের ছেলে সোহাগ মাতুব্বর। ছয় ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি পঞ্চম। এত বড় সংসারে ছোটবেলা থেকেই অভাব লেগে থাকতো। ঠিকমতো তিনবেলা খাবারও খেতে পারতেন না।

২০১৬ সালে বিয়ের পর সংসারের দায়িত্ব এসে পড়ে সোহাগের ওপর। অন্যের জমিতে কাজ করে যে মজুরি পেতেন তা দিয়েই চলতো সংসার। এরপর সন্তানের জন্ম হলে অভাবের সংসারে খুশির বন্যা বয়ে যায়। কিন্তু জন্মের কয়েকমাস পর তারা বুঝতে পারেন সেই সন্তান বুদ্ধি ও শারীরিক প্রতিবন্ধী। বর্তমানে তার সন্তানের বয়স ৬ বছর। আরেক ছেলে জাকারিয়ার বয়স সাড়ে ৪ বছর।
এরমধ্যে এক বছর আগে হঠাৎ সোহাগের ব্রেইনে টিউমার ধরা পড়ে। এরপর ক্যানসার। গ্রামের মানুষের সহযোগিতায় চলে তার চিকিৎসা। এরইমধ্যে বেশ কয়েকটি রেডিওথেরাপি দেয়া হয়। এখনো চলছে তার চিকিৎসা। দিতে হবে আরও থেরাপি। কিন্তু পরিবারটি এখন একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। তাই চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা কামনা করেছেন অসহায় এই মানুষটি।

সোহাগ মাতুব্বর বলেন, এই পরিবারে আমিই একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। আমি অন্যের জমিতে কাজ করে যা পেতাম, তাই দিয়েই সংসার চলতো। হঠাৎ ক্যানসার ধরা পড়ায় চিকিৎসা করতে গিয়ে আমাদের সব শেষ হয়ে গেছে। গ্রামের মানুষের সহযোগিতায় এতদিন চিকিৎসা করাতে পেরেছি। এখনো চিকিৎসা চলছে। সবাই সহযোগিতা করলে হয়তো একটু বাঁচতে পারবো। প্রায় সময় আমার প্রতিবন্ধী ছেলেটাকেও অভাবের জন্য না খেয়ে থাকতে হয়।
প্রতিবেশী মো. মিজান বলেন, সোহাগ মাতুব্বর অনেক গরিব। এতদিন গ্রামের মানুষের সহযোগিতায় তার চিকিৎসা হয়েছে। এখনো তার চিকিৎসা দরকার। ঘরে স্ত্রী ও প্রতিবন্ধী ছেলেসহ দুই ছেলেকে নিয়ে তারা অনেক কষ্টে আছেন। আমরাও মাঝে মধ্যে তাদের নানাভাবে সহযোগিতা করে থাকি।
মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাইনউদ্দিন বলেন, ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের জন্য সমাজসেবা থেকে সরকারিভাবে অনুদান দিয়ে থাকে। সেখানে তারা দরখাস্ত করলে আমি এ ব্যাপারে সহযোগিতা করতে পারবো।
আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/এফএ/জিকেএস