বিপৎসীমার ওপরে তিস্তার পানি, প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি লালমনিরহাট
প্রকাশিত: ০৮:৩৫ এএম, ০৮ জুলাই ২০২৩

উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি আবারও বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণ ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। নদীপাড়ের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। দ্বিতীয় দফায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাটে পানি প্রবেশ করায় গবাদিপশু নিয়ে বিপদে আছেন তিস্তা পারের মানুষ।

শনিবার (৮ জুলাই) সকাল ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ২৮ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। স্বাভাবিক হলো ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার।

আরও পড়ুন: তলিয়ে গেছে ইলিশা লঞ্চঘাট, ভোগান্তিতে যাত্রীরা

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, সকাল ৬টায় বিপদ সীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমতে পারে তিস্তার পানি।

বর্ষা মৌসুমে জুন মাসের শুরু থেকে তিস্তার পানি বাড়া-কমার মধ্যে রয়েছে। প্রথম দফা স্বল্প মাত্রার বন্যার পর পানির গতি অনেকটা স্বাভাবিক থাকলেও শুক্রবার রাত থেকে বাড়তে শুরু করে বিপৎসীমা অতিক্রম করে পানি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ফকিরপাড়া, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করছে।

আরও পড়ুন: কংস নদে নৌকাডুবি: আরও দু’জনের মরদেহ উদ্ধার

চর সিন্দুর্নার আনোয়ার হোসেন বলেন, তিস্তা রাত থেকে বৃদ্ধি পাচ্ছে নদীর পানি। চরের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করছে। চলাচলের রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে।

সিন্দুর্না ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মফিজা রহমান বলেন, তিস্তায় গত চারদিন কোনো পানি ছিল না, আজ হঠাৎ করে রাত থেকে পানি বাড়ছে। তিস্তা পারের মানুষ আমরা সতর্ক আছি।

হাতীবান্ধার গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বলেন, প্রথম দফায় বন্যার পর দ্বিতীয় দফায় গড্ডিমারির পাঁচটি ওয়ার্ডের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করছে। এলাকায় দেখা দিয়েছে বন্যা। তিস্তা পরের লোকজনের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলায় নিম্নাঞ্চলের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। জরুরি প্রয়োজনসহ যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করায় প্রস্তুতি নেওয়া রয়েছে।

রবিউল হাসান/জেডএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।