বগুড়ায় পুলিশের চার মামলায় আসামি বিএনপির ২১১ নেতাকর্মী
বগুড়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ পৃথক চার মামলায় ২১১ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) দিনগত রাত ১২টার পর বগুড়া সদর থানায় তিনটি ও দুপচাঁচিয়া থানায় একটি মামলা করা হয়।
এরই মধ্যে মঙ্গলবার দিনগত রাত ৩টার পর গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতাররা হলেন বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহ্বায়ক মাজেদুর রহমান জুয়েল।
বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জাগো নিউজকে বিষয়গুলো নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বিশেষ ক্ষমতা ও বিস্ফোরক আইনসহ অন্যান্য ধারায় চারটি মামলা হয়েছে। এরইমধ্যে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে।
আরও পড়ুন: বগুড়া বিএনপির সম্পাদকসহ ২ নেতাকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ
বগুড়া সদর থানা সূত্রে জানায়, মঙ্গলবার একদফা দাবিতে সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনার নেতৃত্বে বিএনপির পদযাত্রা শুরু হয়। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে পদযাত্রাটি ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মোড়ে পৌঁছালে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রশিদের নেতৃত্বে ব্যারিকেড দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের জলেশ্বরীতলা কালীমন্দির হয়ে দলীয় কার্যালয় দিকে যেতে বলা হয় । এই সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে সাতমাথা দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে সংঘর্ষ বাধে। এখানে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে ১০ রাউন্ড টিআরশেল ও ২০ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এই সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলায় নারুলি পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক তরিকুল ইসলামসহ আট পুলিশ সদস্য আহত হন।
এ ঘটনায় বগুড়া বনানী পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করেছেন। মামলায় বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজহর তালুকদার হেনাসহ ৪৯ জনকে আসামি করা হয়।
সদর থানা পুলিশ সূত্র আরও জানায়, ওইদিন দুপুর দেড়টার দিকে বিএনপি নেতাকর্মীরা বগুড়া সদর পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা ও ভাংচুর করেন। এ ঘটনাতেও বিএনপি নেতা আলী আজগর তালুকদার হেনাকে প্রধান আসামি করে ২৬ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় পদযাত্রায় হামলায় ২ শতাধিক নেতাকর্মী আহত, দাবি বিএনপির
বগুড়া সদর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক শহীদুল ইসলাম বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাটি দায়ের করেন। এছাড়াও দুপুর ২ টা ৪০ মিনিটে শহরের নবাববাড়ি সড়কে পুলিশের ওপর ককটেল হামলার অভিযোগ এনে পৃথক মামলা করা হয়েছে। বগুড়া সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আব্দুল মালেক বাদী হয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি ও পৌর মেয়র রেজাউল করিম বাদশাকে প্রধান আসামি করে ১১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এখানে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশের চার রাউন্ড টিআরশেল ও ২০ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপের কথা বলা হয়েছে। এই চার মামলাতেই অনেককে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
বগুড়া সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহীনুজ্জামান বলেন, বিএনপির গ্রেফতার দুই নেতাকে বুধবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হবে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে।
জেএস/এএসএম