সাপে কাটার পর বিষাক্ত রাসেল ভাইপার নিয়ে হাসপাতালে হাজির রোগী
কুষ্টিয়ায় সাপে কাটার পর নিজেই বিষাক্ত রাসেল ভাইপার সাপ মেরে ব্যাগে ভরে হাসপাতালে ছুটে আসেন জাহিদুল ইসলাম রাজা (৫৫) নামে এক ব্যবসায়ী। বর্তমানে তিনি কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।
গড়াই নদে শখের বসে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন জাহিদুল। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদের পাশে বালুচরে অস্থায়ী টং ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। হঠাৎ তার ডান পায়ে কিছু একটা কামড় বসায়। টর্চ জ্বেলে তিনি দেখতে পান ছোট্ট একটি কালো রঙের সাপ। সাপটি দেখতে পেয়ে লাঠি দিয়ে তিনি সেটিকে মেরে ফেলেন।
সাপটিকে মেরে একটি ব্যাগে ভরে সোজা মরা সাপ নিয়ে ছুটে আসেন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাপটিকে বিষধর রাসেল ভাইপার বলে শনাক্ত করেন।
মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) রাত ১০টার দিকে সদর উপজেলার জুগিয়া বটতলা এলাকায় গড়াই নদের পাড়ে এ ঘটনা ঘটে। রাত ১১টার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন জাহিদুল ইসলাম ওরফে রাজা (৫৪) নামের ওই লোহা ব্যবসায়ী। তিনি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার জুগিয়া হাটপাড়া এলাকার সামছুল আলমের ছেলে।
বুধবার (১৯ জুলাই) দুপুরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জাহিদুল ইসলাম জানান, রাতে জাল নিয়ে মাছ ধরতে বাড়ির পাশের গড়াই নদে যান। মাছ ধরার এক পর্যায়ে টং ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। হঠাৎ তার ডান পায়ে কিছু একটা কামড় বসায়। টর্চ জ্বেলে তিনি দেখতে পান ছোট্ট একটি কালো রঙের সাপ। সাপটি দেখতে পেয়ে লাঠি দিয়ে তিনি সেটিকে মেরে ফেলেন। এ সময় নিজেই নিজের পা বেঁধে ফেলেন। এরপর চরে বালুকাটা লোকজনকে ডেকে সাপটা ব্যাগে ভরে সোজা হাসপাতালে ছুটে আসেন।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) তাপস কুমার সরকার বলেন, রাসেল ভাইপার সাপটি খুবই ছোট। তবে সাপটির পেট বেশ ফোলা ছিল। ধারণা করা হচ্ছে ছোবল দেওয়ার আগে সাপটি কিছু খেয়েছিল। এজন্য হয়তো বিষ নাও থাকতে পারে। জাহিদুলকে ভ্যাকসিন (অ্যান্টি ভেনম) দেওয়া হয়েছে।
পরিবেশ কর্মী ও সমাজসেবক শাহাবুদ্দিন মিলন জানান, গত কয়েক বছর ধরে কুষ্টিয়ায় গড়াই নদ সংলগ্ন এলাকায় বিষধর রাসেল ভাইপার সাপের উপদ্রপ বেড়েছে। তারা এ পর্যন্ত বিভিন্ন স্থান থেকে অন্তত ৭টি রাসেল ভাইপার সাপ উদ্ধার করে সেগুলোকে নিরাপদ স্থানে ছেড়ে দিয়ে এসেছেন।
বন্যার সময় এই সাপের উপদ্রপ বেশি হয় দাবি করে তিনি এ সময় নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষজনকে সতর্কতার সঙ্গে চলাচলের পরামর্শ দেন।
আল-মামুন সাগর/এফএ/জেআইএম