কিশোরগঞ্জ
টাকার লেনদেন নিয়ে সংঘর্ষ, শতাধিক দোকানপাট ভাঙচুর
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে বিকাশে টাকা লেনদেনকে কেন্দ্র দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টা থেকে শুরু হয়ে এ সংঘর্ষ চলে রাত ১১টা পর্যন্ত। এসময় শতাধিক দোকানপাট ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। আতঙ্কে সকাল থেকে দোকানপাট বন্ধ করে রেখেছেন বাজারের অন্যান্য দোকানিরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ঘটনায় দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার বিকেল ৫টার দিকে বাজিতপুর উপজেলার সরারচর বাজারে সিএমবি রোডের জাহিদের বিকাশের দোকানে আসেন অপরিচিত তিনজন। তারা বিকাশের মাধ্যমে সাড়ে ২৮ হাজার টাকা জরুরি ভিত্তিতে পাঠানোর কথা বলেন। পরে জাহিদ তার এজেন্ট নম্বর থেকে টাকা পাঠান। তখন তাদের মধ্যে একজন টাকা নিয়ে আসছেন বলে চলে যান। বাকি দুজন অপেক্ষা করেন।

কিছুক্ষণ পরে একটি অটোরিকশা ও চালককে জিম্মায় রেখে সেই দুজনও দোকান থেকে চলে যান। এর আনুমানিক ৩০ মিনিট পর পার্শ্ববর্তী দোকানের মোটরসাইকেল মিস্ত্রি মামুনের মাধ্যমে ফোনে জাহিদকে ডেকে নেন দক্ষিণ সরারচর এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার সুজন মিয়া। মামুন তাকে বাজারের ছাগল মহলের সুজন মেম্বারের কাছে নিয়ে গেলে তিনি জিম্মায় রাখা অটোরিকশাটি নিয়ে আসতে চাপ দেন। তবে জাহিদুল ইসলাম গাড়ি ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানালে সুজন মেম্বার তাকে মারধর করেন।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সন্ধ্যা ৭টার দিকে দুই পক্ষের লোকজনই দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পাল্টাপাল্টি দোকানপাট ভাঙচুর করে। সংঘর্ষ চলে রাত প্রায় ১১টা পর্যন্ত। এ ঘটনায় দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে বাজারের ব্যবসায়ীরা একত্রিত হয়ে দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাটের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চেয়ে সরারচর ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার সুজন মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় তিনি ও তার লোকজন জড়িত নন।
সংঘর্ষে সবজি ব্যবসায়ী আসলাম উদ্দিনের দোকানটিও ভাঙচুর করা হয়েছে। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘সবজি বিক্রি করে কোনোরকমে কষ্টে আমার সংসার চলে। আমি কী দোষ করেছি, এখন আমার ক্ষতিপূরণ কে দেবে?’
এ বিষয়ে বিকাশের মার্চেন্ট এজেন্ট জাহিদুর রহমান মিঠু বলেন, ‘আমি গতকাল বিকেলে বিকাশে ৩০ হাজার টাকা পাঠিয়েছিলাম। পরে টাকা না দিয়ে আমার সঙ্গে প্রতারণা করে একটি চক্র। এ চক্রের অন্যতম সুজন মেম্বার আমাকে লোক মারফতে ডেকে নিয়ে টাকা না দিয়ে উল্টো মারধর করেন। আমার গ্রামবাসীরা প্রতিবাদ জানালে তাদের দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়।’
বাজিতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, বিকাশে টাকা লেনদেনকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেননি।
এসকে রাসেল/এসআর/জিকেএস