জালে উঠছে মাছ, ধারদেনা পরিশোধের আশায় জেলেরা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ভোলা
প্রকাশিত: ০৫:১০ এএম, ০৫ নভেম্বর ২০২৩

মাছ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে জেলেদের জালে মিলছে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ, পাঙাশ ও পোয়াসহ বিভিন্ন জাতের মাছ। এতে হাসি ফুটেছে জেলেদের মুখে। আরও পাঁচ-ছয়দিন এভাবে জালে মাছ পেলে নিষেধাজ্ঞার সময় যে ধারদেনা হয়েছে তা পরিশোধ করে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হবে, সে আশাই করছেন বলে জানিয়েছেন জেলেরা।

শনিবার (৪ নভেম্বর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভোলা সদর উপজেলার বিভিন্ন মৎস্যঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, জেলেরা মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে দলবেঁধে ছুটে যাচ্ছেন। অনেকে নদী থেকে মাছসহ হাসিমুখে ঘাটেও ফিরছেন। ঘাটে সেই মাছ বিক্রি করে আবারও জাল ফেলতে যাচ্ছেন নদীতে।

jagonews24

ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের তুলাতলি এলাকার মেঘনা নদীর জেলে মো. নুরু আলম মাঝি, তৈয়ব মাঝি, হাসান মাঝি ও জাকীর মাঝি জানান, নিষেধাজ্ঞা শেষে তারা নদীতে গিয়ে আশানুরূপ মাছ পাচ্ছেন। জালে বিভিন্ন সাইজের ইলিশ, পাঙ্গাস, পোয়াসহ নানা জাতের মাছ উঠছে। এতে অনেক খুশি তারা।

শিবপুর ইউনিয়নের ভোলার খাল এলাকার মেঘনা নদীর জেলে মো. আনোয়ার মাঝি, স্বপন মাঝি ও সিদ্দিক মাঝি জানান, তারা নিষেধাজ্ঞার পরে পৃথকভাবে চার-পাঁচজন মাঝি নিয়ে নদীতে গিয়ে প্রতিদিনই ভালো পরিমাণ ইলিশ, পাঙাশ ও পোয়া মাছ পাচ্ছেন। প্রতিদিনই তারা ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করতে পারছেন।

ভেদুরিয়া ইউনিয়নের হাজিরহাট এলাকার তেঁতুলিয়া নদীর জেলে মো. আকবর মাঝি, সোহেল মাঝি ও মাসুদ মাঝি জানান, বর্তমানে যে পরিমাণ ইলিশ ও পাঙাশসহ বিভিন্ন মাছ তারা নদীতে গিয়ে পাচ্ছেন এটি যদি আরও পাঁচ-ছয়দিন পাওয়া যায় তাহলে নিষেধাজ্ঞার সময়ের ধারদেনা পরিশোধ হয়ে যাবে।

jagonews24

তুলাতুলি মৎস্যঘাটে মাছ কিনতে আসা ক্রেতা মো. মিজানুর রহমান ও কবির হোসেন জানান, বাজারে মাছের দাম বেশি হওয়ায় তারা মাছ কিনতে ঘাটে এসেছেন। কিন্তু ঘাটেও দাম বেশি। এক কেজি সাইজের ইলিশের হালি সাড়ে পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা আর পাঙাশ চার হাজার থেকে আট হাজার পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

তুলাতুলি মৎস্যঘাটের আড়তদার মো. আব্দুল খালেক জানান, নিষেধাজ্ঞার পর জেলেরা নদীতে গিয়ে ইলিশের পাশাপাশি ৫/১২ কেজি ওজনের পাঙাশ পাচ্ছেন। এতে আমাদের ঘাটে বেচা-বিক্রি জমজমাট হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে খুচরা ও পাইকারি ক্রেতারা এসে মাছ কিনছেন। তবে ২২ দিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ঢাকা, বরিশাল, চাঁদপুরসহ বিভিন্ন পাইকারি আড়তে মাছ পাঠানোর চাহিদা থাকায় দাম একটু বেশি। কয়েকদিন পর দাম আরেকটু কমবে।

jagonews24

ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কামাল আজাদ জাগো নিউজকে জানান, জেলেরা বর্তমানে যে পরিমাণ মাছ মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে পাচ্ছেন তাতে তারা খুশি। তবে আগামী কয়েক দিন পর নদীতে আরও বেশি ইলিশ, পাঙাশ ও পোয়াসহ বিভিন্ন মাছ পাওয়া যেতে পারে।

নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেরা যে ধারদেনা করেছেন এবার তা পরিশোধ করে আগামী দিনগুলোর জন্য সঞ্চয়ও করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন এ কর্মকর্তা।

জুয়েল সাহা বিকাশ/এমকেআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।