জীবিত থেকেও ছয় বছর ধরে ‘মৃত’ হালিমা
হালিমা খাতুন, বয়সের ভারে অনেকটা নুয়ে পড়েছেন। থাকছেন ছেলেদের সঙ্গে। তবে জীবিত থাকলেও জাতীয় পরিচয়পত্রে তাকে দেখানো হয়েছে মৃত হিসেবে। সম্প্রতি বয়স্ক ভাতার আবেদন করতে গেলে বিষয়টি জানতে পারে তার পরিবার। তাই ভাতার কার্ড পাচ্ছেন না হালিমা খাতুন। বঞ্চিত হচ্ছেন সরকারি সাহায্য থেকে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হালিমা খাতুনের বাড়ি শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বড় গোপালপুর ইউনিয়নের আইজউদ্দিন এলাকায়। স্বামীর নাম কাইয়ুম শিকদার। তার জন্ম ১৯৩৫ সালে। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ভোট দিতে গিয়েছিলেন হালিমা খাতুন। আঙুলের ছাপ না মেলায় সেদিন ফিরে এসেছিলেন তিনি। তখন অবশ্য বিষয়টি আমলে নেননি পরিবারের সদস্যরা।
সম্প্রতি বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে আবেদন করলে সেখান থেকে জানানো হয় তিনি ‘মৃত’। ছয় বছর আগেই মারা গেছেন। আর জাতীয়পরিচয়পত্রে নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে পারলে বয়স্ক ভাতা মিলবে তার।
হালিমা খাতুনের বড় ছেলে মোস্তফা শিকদার বলেন, মায়ের জন্য বয়স্ক ভাতার কার্ডের আবেদন করতে গেলে তারা জানায় আইডি কার্ডে নাকি তাকে মৃত দেখানো হয়েছে। তিনি নাকি ছয় বছর আগেই মারা গেছেন। আমরা তো বিষয়টি জানতামই না। কিন্তু আমার মা তো এখনো জীবিত। যারা হালনাগাদ করেছে তারাই এ ভুল করেছে। তাদের এ ভুলের জন্য আমার মা বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন না।
হালিমা খাতুনের পুত্রবধূ ফাতেমা বেগম বলেন, শাশুড়ি এখনো জীবিত। বয়স্ক ভাতার কার্ড করতে গেলে ওনারা জানায় আমার শাশুড়ি নাকি মৃত। এ কারণে তাকে বয়স্ক ভাতার কার্ড দেওয়া হয়নি।
বড়গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, কাইয়ুম শিকদারের স্ত্রী হালিমা খাতুন এখনো জীবিত। যারা ভোটার আইডি কার্ড হালনাগাদ করেছেন তারা ভুলে হালিমা খাতুনকে মৃত বানিয়েছেন। এরকম অনেক মানুষের ভোটার আইডি কার্ড ভুলে ভরা। এসব সংশোধন করতে মানুষের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাজিরা উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় মৃত ব্যক্তির ভোটার তালিকায় হালিমা খাতুনের নাম চলে এসেছে। এছাড়া বাকি সবকিছু ঠিকঠাক আছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে ভুক্তভোগীর পরিবার যোগাযোগ করলে সমস্যার সমাধান হবে।
বিধান মজুমদার অনি/এসজে/এমএস