হবিগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষ, আহত ১০

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি হবিগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৫:২৭ পিএম, ১৬ নভেম্বর ২০২৩

 

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে নির্বাচনের তফসিলকে স্বাগত জানিয়ে মিছিল করাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সধারণ সম্পাদক আবু সিদ্দিকসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুক আলী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ধাওয়া- পাল্টাধাওয়া হয়েছে। তবে সংঘর্ষ হয়নি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বুধবার (১৫ নভেম্বর) রাতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে মিছিল বের করা হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক গতি গোবিন্দ দাশ ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরীর নেতৃত্বে মিছিল ও পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সিদ্দিক ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক লোকমান খানসহ আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন পৃথক মিছিল ও পথসভা করেন।

Hobi-(1).jpg

মিছিল ও পথসভা শেষে ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরোধকে কেন্দ্র করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরী এবং বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ মিলুর মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। এসময় উভয় পক্ষের নেতাকর্মীর মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে তারা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।

ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সিদ্দিক (৫৫), পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাবলু মিয়া (৩০), সঞ্জয় দাস (৪০), মিঠু শীল (৩০), সৌরভ তালুকদার (২৫), আনহার আহমদ (৩৫), জিজু মিয়া (৩০) ও জায়েদ মিয়াসহ (৩২) উভয়ের পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন।

খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানাপুলিশ শহরে অবস্থান নেয়। পরে বাহুবল-নবীগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আবুল খয়ের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনার পর থেকে শহরজুরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরী বলেন, ‘রাতের বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য আওয়ামী লীগ নেতারা বসেন। বিষয়টি মীমাংসাও হয়ে যায়। আমার সঙ্গে কথা বলার একপর্যায়ে মোস্তাক আহমেদ মিলু উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় করেন। একপর্যায়ে তিনি পিস্তল বের করে আমার দিকে তাক করেন। এ ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।’

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ মিলু বলেন, ‘বুধবার রাতের ঘটনা মীমাংসার জন্য বসলে সিনিয়র নেতা হিসেবে সিদ্দিক ভাইয়ের সঙ্গে সাজুকে মিলিয়ে দেওয়ার জন্য বলি। এসময় সাইফুল জাহান চৌধুরী অশোভনীয় কথাবার্তা বলেন। এনিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।’

পিস্তল বের করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সাইফুল ও সাজুর সঙ্গেতো আমার কোনো ঝামেলা নেই। আমি কেন পিস্তল বের করবো? পিস্তল বের করার বিষয়টি সঠিক নয়।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন আহমদ বলেন, রাতের ঘটনাটি জেলা আওয়ামী লীগের নির্দেশনায় আমিসহ আওয়ামী লীগের নেতারা বসে সমাধান করে দেই। কিন্তু একপর্যায়ে আমাকে অমান্য করে কিছু নেতা তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এরপর ঝামেলার সৃষ্টি হয়।

সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন/এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।