এক বছরেও হয়নি হত্যার রহস্যের উদঘাটন, তদন্তে পিবিআই

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রকাশিত: ০৯:৪০ পিএম, ২৭ নভেম্বর ২০২৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে লক্ষ্মণ চন্দ্র বর্মণ (২৫) নামের এক যুবককে হত্যা করা হয়। পাঁচদিন পর বাড়ির কাছে একটি সীমানা প্রাচীরের ভেতরে তার গলিত মরদেহ পাওয়া যায়। কিন্তু এ হত্যাকাণ্ডের এক বছরেও কোনো কূল-কিনারা হয়নি। হয়নি মামলা। ছেলের হত্যাকারীদের শনাক্ত ও গ্রেফতার করতে না দেখে হতাশ নিহত লক্ষ্মণের মা-বাবা।

নিহত লক্ষ্মণ বর্মণ পৌর এলাকার ভাদুঘর দাস পাড়ার রতন চন্দ্র বর্মণ ও ফুলমালা রানী বর্মণের বড় ছেলে। এক বছর আগে তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যার অভিযোগ করেছে তার পরিবার। এ ঘটনায় থানায় মামলা দিলেও তা নেয়নি পুলিশ। পরে বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা করা হয়। সেই মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)। রোববার (২৬ নভেম্বর) এ মামলায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পিবিআইয়ের অতিরিক্ত ডিআইজি মজিদ আলী।

Kill-(6).jpg

নিহত লক্ষ্মণের মা ফুলমালা রানী বর্মণ বলেন, ‘এক বছর আগে ২০২২ সালের ১৯ ডিসেম্বর সকালে লক্ষ্মণকে খাবার দিচ্ছিলাম। এসময় দুইজন ছেলে তাকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর বিভিন্ন জায়গায় খুঁজে তাকে পাইনি। পরদিন অভিযুক্ত স্থানীয় ইয়াছিন ও টিটুকে জিজ্ঞেস করি আমার ছেলে কোথায়? উত্তর তারা বলে, আমার নামে মামলা দিবা নাকি? পারলে কিছু করার হুমকি দেয় তারা। বললাম, তোরা তো আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে এসেছিলি। উত্তরে তারা বলে, আমরা কি তোমার ছেলেকে মেরে ফেলেছি নাকি? এখন আমি কিছু বুঝি না। তারা অনেক প্রভাবশালী। প্রধানমন্ত্রীর কাছে ছেলে হত্যার বিচার চাই।’

লক্ষ্মণের ভাই রাম প্রসাদ বর্মণ বলেন, ‘আমার ভাইকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়ার পাঁচদিন পর একটি খালি বাউন্ডারি দেওয়া বাড়ির ভেতরে গলিত মরদেহ পাই। মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্ত করা হয়। এ ঘটনায় আমরা থানায় মামলা দিলে নেয়নি।

Kill-(6).jpg

তিনি আরও বলেন, ‘অবশেষে আদালতের দারস্থ হই। সেই মামলায় স্থানীয় শাহীন, রুহুল আমিন, ইয়াছিন, জাকির, বাবু, টিটু, সাব্বির ও শওকতকে আসামি করা হয়েছে। কারণ তারাই আমার ভাইকে বিভিন্ন সময় ডেকে নিতেন। তাদের কথা না শুনলে মারধর করতেন।’

নিহত লক্ষ্মণ বর্মণের বাবা রতন চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের প্রায় চার মাস আগে মাত্র দেড়শ টাকার জন্য আমার ছেলেকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিল জাকির। এ ঘটনায় আমি থানায় মামলা করি। পরে স্থানীয় সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর সালিশি সভা করে জরিমানার মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। জরিমানা দেওয়ায় তারা ক্ষিপ্ত ছিল। আমার ছেলেকে এ কারণেই তারা হত্যা করতে পারে। আমি তাদের শাস্তি চাই।’

Kill-(6).jpg

এ বিষয়ে সাবেক পৌর কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম নেহার বলেন, ‘ঝগড়া হলে লক্ষ্মণের মাথা ফাটিয়ে দেয়। বিষয়টি আমি মীমাংসা করে দিয়েছিলাম। কিন্তু এ ঘটনার সঙ্গে হত্যার যোগসূত্র থাকতে পারে কি না তা বলতে পারছি না।’

তদন্তে আসা পিবিআইয়ের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মজিদ আলী বলেন, তদন্ত শেষে যা সঠিক আমরা তা আদালতে তুলে ধরবো। যারা জড়িত তাদের বিষয়টি রিপোর্টে আসবে। পিবিআই সবসময় নিরপেক্ষ তদন্ত করে।

আবুল হাসনাত মো. রাফি/এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।