নদী থেকে প্রেমিকার কঙ্কাল উদ্ধার, বাবাসহ গ্রেফতার প্রেমিক
মাগুরায় মারিয়া খাতুন নামে এক তরুণীকে হত্যার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে প্রেমিক শশী আহমেদ ও তার বাবা নবুয়াত আলীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) ভোরে পুলিশ শ্রীপুর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রাম থেকে তাদের গ্রেফতার করে। তারা ওই গ্রামের বাসিন্দা।
সূত্র জানায়, কয়েক মাস আগে শশী (১৯) ও মারিয়া খাতুনের (১৭) মধ্যে মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর তাকে হত্যা করে মরদেহ সদর উপজেলার গাংনালিয়া ব্রিজের নিচে ফেলে দেয় দুর্বৃত্তরা।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ নভেম্বর এলাকাবাসীর খবরের ভিত্তিতে সদর উপজেলার গাংনালিয়ায় কুমার নদের ব্রিজের নিচে কচুরিপানার মধ্যে থেকে একটি কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়। পরে পোশাক ও ঘড়ি থেকে মারিয়ার স্বজনরা মরদেহটি শনাক্ত করেন। এরপর পুলিশ তদন্তে নেমে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে প্রমাণ পায়। মোবাইল প্রযুক্তির মাধ্যমে ঘটনার সঙ্গে ওই দুজনের জড়িত থাকার তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের গ্রেফতার করে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সরাসরি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেননি। তবে পুলিশকে শশী জানিয়েছেন মেয়েটির সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। শ্বাসকষ্টজনিত রোগের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে নদীর তীরে শশী ফেলে রেখে যান।
গ্রেফতারদের বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতের নির্দেশে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করবে।
এ সংক্রান্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মাগুরা সদর থানার উপ-পরিচালক (এসআই) আলমগীর হোসেন বলেন, নিহত মারিয়ার সঙ্গে শশী আহমেদের মোবাইলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সূত্র ধরে মারিয়া শহরের আদর্শ পাড়ায় আমির খসরুর বাড়িতে শশীর ভাড়া করা কক্ষে আসা যাওয়া করতেন। এরই এক পর্যায়ে অজ্ঞাত কারণে শশী মারিয়াকে হত্যা করেন। পরে বাবার সহযোগিতায় তার মরদেহ তোষক দিয়ে মুড়িয়ে ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে যান।
এদিকে ১৫ নভেম্বর কঙ্কাল উদ্ধার হয় মারিয়ার। যা বিভিন্ন গণমাধ্যামে প্রচার ও প্রকাশ হয়। এটি দেখে মারিয়ার বাবা আছাদুজ্জামানসহ অন্যরা সদর থানায় যোগাযোগ করেন। সেখানে মরদেহের কঙ্কালের সঙ্গে পাওয়া হাতঘড়ি ও জামাকাপড় দেখে তারা মরদেহটি মারিয়ার বলে পুলিশকে জানান।
পরবর্তীতে পুলিশ ঘটনার তদন্তে নামে। এ সময় মারিয়ার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বরের সাহায্যে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তাদের গ্রেফতার করে।
তদন্তকারী এই কর্মকর্তা জানান, হত্যাকাণ্ডের কারণ এখনো রহস্যজনক। অভিযুক্তদের রিমান্ড আবেদন করা হবে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে বলে আশা করছি।
মিলন রহমান/এফএ/জেআইএম