লালমনিরহাটে শীতকালীন সবজি নিয়ে বিপাকে কৃষক


প্রকাশিত: ১০:৫০ এএম, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৪

দাম কম ও বাজারে ক্রেতা না থাকায় শীতকালীন সবজি মুলা, বেগুন, বাঁধাকপি ও ফুলকপি নিয়ে বিপাকে পড়েছে লালমনিরহাটের কৃষক। অনেক কৃষক তার জমি থেকে মুলা তুলে বাজারে নিয়ে নেয়ার পর সেখানে কোন ক্রেতা না থাকায় মুলাসহ অন্যসব সবজি নর্দমায় ফেলে দিয়ে যাচ্ছেন। জেলায় এক টাকা দরে ফুলকপি, বাধাকপি ও বেগুন পাওয়া যাচ্ছে। সেগুলো বিক্রি করতেও আবার করা হচ্ছে মাইকিং। কৃষকের এ বেহাল দশায় মুনাফা লুটছে এক ধরনের ব্যবসায়ীরা। যারা কিনা এসব পণ্য কিনে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে বিক্রি করছে অধিক দামে। আর সুদে টাকা নিয়ে আবাদ করে এখন বাড়ি ছাড়া হয়েছে জেলার শত শত কৃষক। অনুকূল আবহাওয়া ও সঠিক পরিচর্যার কারণে এবার জেলায় ফুলকপি, বাধাকপি, বেগুন ও মুলার বাম্পার ফলন হয়। কিন্তু, দাম না থাকায় শত শত কৃষক ইতোমধ্যে পথে বসেছে।

কুলাঘাটের কৃষক গাজী হোসেন জানান, এ বছর সবজি চাষে তার লোকসান ৩৫ হাজার টাকা। এনজিও থেকে লোন নিয়ে আবাদ করেছিলেন তিনি। এখন দেনা পরিশোধ করতে জমি অথবা গরু বিক্রি করতে হবে।

অনেক কুষক জানিয়েছেন, মুলা বিক্রি না হওয়ায় জমিতে রেখেই পচন-নাশক ওষধ দিয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে।

কৃষি অফিস জানায়, প্রায় ২২৫ হেক্টর জমিতে ফুলকপি, ২৬০ হেক্টর জমিতে বেগুন, ও ২৫০ হেক্টর জমিতে মুলা চাষ করা হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে প্রতি কেজি ফুলকপি ২৫ থেকে ৩০ টাকা, বেগুন ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, মুলা ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে বিক্রি করে কৃষকদের কিছুটা লাভ হলেও বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে পানির দরে।

অন্যদিকে ক্রেতা সংগ্রহে মাইক লাগিয়ে প্রচার করা হচ্ছে, আসুন ফুলকপি ও বেগুন এক টাকা। তারপরও বিক্রি হচ্ছেনা। বাধ্য হয়ে ফেরার পথে কৃষকরা তাদের মুলা, বাধাকপি, ফুলকপি ও বেগুন ফেলে দিয়ে যাচ্ছে বাজারে। অনেকে আবার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে কেটে গরুকে খাওয়াচ্ছেন। জেলার প্রায় সবগুলো হাট বাজার ও গ্রাম ঘুরে দেখা যায় এ চিত্র।

অনেক কৃষক বলেন,আবাদ করেও বিপদ, না করলেও বিপদ। আমরা কোন দিকে যাব। কৃষি বিভাগের একটি সূত্র জানায়, জেলায় প্রায় কয়েকশ কৃষক ধার দেনা করে সবজি চাষ করেছে।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।