আটোয়ারী সীমান্তে বিষ প্রয়োগে চিতাবাঘ হত্যা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি পঞ্চগড়
প্রকাশিত: ০৫:৪৬ পিএম, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে বিষ প্রয়োগে একটি চিতাবাঘ মেরে ফেলার ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে উপজেলা প্রশাসন।

শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার তড়িয়া ইউনিয়নের দাড়খোর সীমান্ত এলাকায় বাঘটির মরদেহ উদ্ধার করেন বনবিভাগের লোকজন। বিকেলে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে নেওয়া হয়। বাঘটির দৈর্ঘ্য ৫২ ইঞ্চি এবং উচ্চতা ৩০ ইঞ্চি বলে জানিয়েছে বনবিভাগ।

বনবিভাগ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, আটোয়ারী উপজেলার দাড়খোর সীমান্তের ভারতীয় অংশের চা বাগান ও জঙ্গলে চিতাবাঘসহ অনেক বন্যপ্রাণী রয়েছে। সীমান্তে বাংলাদেশের অভ্যন্তরের চা বাগান ও ভুট্টাক্ষেতে মাঝে মধ্যে এসব প্রাণী দেখা যায়। বৃহস্পতিবার সীমান্ত এলাকার দাড়খোর গ্রামের এক কৃষকের একটি গরুকে আক্রমণ করে চিতাবাঘটি। খবর পেয়ে কয়েকশ গ্রামবাসী সেখানে জড়ো হন। এরইমধ্যে মারা যাওয়া গরুর সঙ্গে কে বা কারা বিষ মিশিয়ে রাখেন। আজ সকাল ৯টার দিকে সীমান্তের কাছে নাগর নদীর পাড়ে বাঘটির মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। খবর পেয়ে স্থানীয় প্রশাসনসহ বিজিবি, পুলিশ ও বনবিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান।

এর আগে ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বোদা উপজেলার রহমতপুর গ্রামে একটি চিতাবাঘকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

দাড়খোর গ্রামের কৃষক মনতাজ আলী বলেন, বাঘটি এখানকার একটি গরুকে আক্রমণ করেছিল। পরে মৃত গরুর মধ্যে বিষ দেওয়া হয়েছিল। পরে বাঘটি আবারও ওই গরুর মাংস খেয়ে বিষের কারণে মারা গেছে বলে শুনেছি। তবে কে বিষ দিয়েছে আমি জানি না।

স্থানীয় ইউপি মেম্বার নজরুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় আকবর আলীর একটি গরু হিংস্র প্রাণীর আক্রমণে মারা যায়। তখনো কেউ বাঘের কথা জানতেন না। পরে মৃত গরুটিতে বিষ প্রয়োগ করে নাগর নদীর পাড়ে ফেলে রাখা হয়।

বনবিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মধুসূদন বর্মণ বলেন, এলাকায় চিতাবাঘটিকে ঘোরাঘুরি করতে দেখেন স্থানীয়রা। তবে বাঘটি কীভাবে মারা গেছে, তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। এটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) পঞ্চগড় আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আজহারুল ইসলাম জুয়েল বলেন, ওই এলাকায় চা-বাগান তৈরি হওয়ায় ভারত থেকে এই চিতাবাঘ বাংলাদেশে ঢুকে আশ্রয় নিতে পারে।

এ বিষয়ে আটোয়ারী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, একটি মৃত বাঘ হাসপাতালে আনা হয়েছে। বনবিভাগ যদি প্রয়োজনীয় সাপোর্ট দেয়, তাহলে ময়নাতদন্তের পর যথাযথ ল্যাবে নমুনা পাঠানো হবে।।

আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেদুল হাসান বলেন, চিতাবাঘটির মৃত্যুর ঘটনায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।

সফিকুল আলম/এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।