কারুশিল্প মেলায় মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে নকশি কাঁথা

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ১৬ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব। বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে উদ্যোগে আয়োজিত এ মেলার মূল আকর্ষণে পরিণত হয়েছে গ্রামীণ লোকজ সংস্কৃতির অন্যতম মাধ্যম নকশি কাঁথা।
বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকালে সোনারগাঁ জাদুঘরে নকশি কাঁথার স্টলে সরেজমিনে গিয়ে এমনই চিত্র লক্ষ্য করা যায়।
লাল, নীল, হলুদ বেগুনীসহ বিভিন্ন রঙ্গিন সুতোয় আর সোনামুখি ছোট্র সুইয়ের প্রতি ফোঁড়ে মনের মাধুরী মিশিয়ে বাহারী ডিজাইনের একেকটা নকশি কাঁথা তৈরি করা হয়। যা দেখে মেলায় আগত ক্রেতা দর্শনার্থীরা মুগ্ধ হচ্ছেন।
তানিয়া আক্তার নামের এক দর্শনার্থী জাগো নিউজকে বলেন, ছোটবেলায় নানী-দাদিদের কাছে নকশি কাঁথার নাম শুনেছি। কিন্তু বর্তমানে এসব কাঁথা সচরাচর পাওয়া যায় না। দীর্ঘদিন পর সোনারগাঁ মেলায় এসে নকশী কাঁথার স্টলে চোখ আটকে গেলো। নানা বাহারী ডিজাইনের নকশি কাঁথা দেখে আমি মুগ্ধ।
রুপগঞ্জ থেকে মেলায় এসেছেন রিনা বেগম। তিনি বলেন, নকশি কাথাঁ আমার সবসময়ই প্রিয়। অনেক জায়গায় নকশি কাঁথা কিনতে পাওয়া গেলেও চোখের সামনে তৈরিকৃত নকশি কাঁথার সৌন্দর্য অন্যরকম। তাই স্টলটি থেকে কয়েকটি নকশি কাঁথা কিনে নিয়ে যাচ্ছি।
স্টলটির মালিক হোসনে আরা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, প্রতিবছরই আমি এ মেলায় অংশনিউ। ৪০ বছর ধরে আমি এ পেশার সঙ্গে যুক্ত আছি। নিজে কাজ করার পাশাপাশি আমি অনেককেই প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। আমাদের দোকানের প্রত্যেকটি পণ্য নিজের হাতে তৈরি। আমার দোকানে ১২০০ টাকা শুরু হয়ে ৫০ হাজার টাকার মূল্যের নকশি কাঁথা রয়েছে। মেলার শুরুর দিন থেকে এখনো পর্যন্ত ক্রেতা দর্শনার্থীদের ভালো সাড়া পেয়েছি।
এবারের মেলায় প্রবেশ মূল্য ধরা হয়েছে ৫০ টাকা। তবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য করা হয়েছে ৩০ টাকা করে। বিকেল ৫টার পর সবাই বিনামূল্যে মেলায় প্রবেশ করবেন। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে মেলা চলছে রাত ৮টা পর্যন্ত। কারুশিল্প মেলার পাশাপাশি আগত ক্রেতা-দর্শনার্থীদের জন্য লোকজ উৎসবে প্রতিদিন বিকেল থেকে জারি,সারি, ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া, লালনগীতি, হাসন রাজার গান, মুর্শিদী গান, চর্যাগান, লোকগল্প বলা, লোকজ নৃত্যসহ বিভিন্ন লোক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে।
রাশেদুল ইসলাম রাজু/এনআইবি/জেআইএম