দেরিতে প্রশ্ন সরবরাহ

শেরপুরে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, দুই শিক্ষককে অব্যাহতি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি শেরপুর
প্রকাশিত: ০৬:৫৪ পিএম, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

শেরপুরে এসএসসি পরীক্ষার হলে সময়মতো প্রশ্ন না দেওয়া এবং আগে উত্তরপত্র নেওয়ায় প্রতিবাদে একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। বিষয়টির সমাধান না পাওয়া পর্যন্ত কেন্দ্রে অবস্থান শুরু করলে জেলা প্রশাসনের আশ্বাসে তারা বাড়ি ফেরে যায়। এ ঘটনায় দুই শিক্ষককে পরীক্ষার পর্যবেক্ষণ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সারাদেশে শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে এ ঘটন ঘটে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শেরপুর মডেল গার্লস স্কুল কেন্দ্রের ২০১ নম্বর কক্ষে প্রশ্নপত্র সকাল ১০টায় দেওয়ার কথা থাকলেও বহুনির্বাচনী প্রশ্ন দেওয়া হয়েছে ১৭ মিনিট পর। লিখিত উত্তরপত্র ১০টা ৩০ মিনিট এবং লিখিত প্রশ্ন দেওয়া হয়েছে ১০টা ৫২ মিনিটে। অথচ উত্তরপত্র নেওয়া হয়েছে ঠিক ১টার সময়। ওই কক্ষে শেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও আতিউর রহমান মডেল গার্লস স্কুলের ৪৯ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়।

পরীক্ষা চলাকালে পর্যবেক্ষক শাহাদাৎ হোসেন এবং নাজির আহমেদের অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ তোলে পরীক্ষার্থীরা। এসব ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে পরীক্ষার শেষে কেন্দ্রে বিক্ষোভ করেন পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এ কেন্দ্র বাতিলের দাবিতে অবস্থান করেন তারা। পরে বিকেল পৌনে ৪টার দিকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বাড়িতে ফিরে যান।

২০১ নম্বর কক্ষের পরীক্ষার্থী ও শেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তুষি বলে, ‘আমাদের আধাঘণ্টা সময় নষ্ট হয়েছে পরীক্ষার হলে। আমাদের বাড়তি সময়ও দেওয়া হয়নি। আমাদের প্রিপারেশন ভালো থাকলেও আমরা সময়ের অভাবে লিখতে পারিনি। আমরা এ কেন্দ্র পরিবর্তন চাই এবং জড়িত শিক্ষকদের অব্যাহতি চাই।’

আরেক শিক্ষার্থী আফরিন নুন বলে, ‘স্যাররা খাতা ও প্রশ্ন দিয়েছেন দেরিতে। আমাদের ৩২ মিনিট সময় নষ্ট হয়েছে। যে কারণে আমরা সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরগুলো ঠিকভাবে লিখতে পারিনি। আমরা ভালো রেজাল্টের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। স্যাররা আমাদের সঙ্গে তুই তুকারিও করেছেন। এজন্য হলে অনেকেই কান্নাকাটি করেছে। আমাদের বাড়তি কাগজও উঠে গিয়ে আনতে হয়েছে। তারা এসে এগিয়ে দেননি।’

কেন্দ্রভিত্তিক সমস্যা নিরসন, কক্ষ পরিদর্শক শিক্ষককে বাতিল এবং কেন্দ্র বাতিল করে অন্য কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানান অভিভাবকরাও।

অভিভাবক মাসুদ হাসান বাদল বলেন, ‘আমরা ১০ বছর অপেক্ষা করে শিক্ষার্থীদের এসএসসি পরীক্ষা দিতে পাঠিয়েছি। এখন স্যারদের অবহেলার কারণে তাদের রেজাল্ট বিপর্যয় হলে এর দায় কে নেবে?’

jagonews24

তবে শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে কাজ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শেরপুর সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. চাঁন মিয়া।

তিনি বলেন, আমরা এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। সরাসরি সবাই অভিযোগ করেছেন। আমরা সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করছি।

এ ঘটনায় দুই শিক্ষককে পরীক্ষার পর্যবেক্ষণ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন কেন্দ্রসচিব ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক।

শেরপুর -২ অঞ্চলের কেন্দ্রসচিব এ্যানি সুরাইয়া মিলোজ বলেন, আমরা পর্যবেক্ষকদের আরও সচেতনভাবে কাজ করার তাগিদ দেবো।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) রাজীব উল হক বলেন, এরইমধ্যে পরীক্ষাকেন্দ্রের সব দায়িত্ব থেকে ওই কক্ষের দুই শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তদন্তে কারো দায়িত্বে অবহেলার বিষয় প্রমাণ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

ইমরান হাসান রাব্বী/এসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।