চলার রাস্তা কেটে বাঁশের বেড়া, ভোগান্তিতে ৫০ পরিবার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ফেনী
প্রকাশিত: ১১:২৮ এএম, ১৯ মার্চ ২০২৪

বাড়িতে প্রবেশের রাস্তার মাটি কেটে বাঁশের বেড়া ও কাঁটা দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন জমির মালিক। এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের জামাল কাজী বাড়ির ৫০টি পরিবার। তাদের প্রায় দেড় কিলোমিটার ঘুরে স্থানীয় বাজারে আসা-যাওয়া করতে গিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

গত ১২ মার্চ ওই ইউনিয়নের বাদামতলী এলাকায় ৩০ বছরের পুরোনো চলাচলের রাস্তা কেটে বাঁশ ও কাঁটা দিয়ে চলাচলের পথ বন্ধ করে রাখায় গত ৬ দিন ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছে ৫০টি পরিবারের পাঁচ শতাধিক মানুষ।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফাজিলপুর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের জামাল কাজী বাড়ির চলাচলের পুরোনো তিনশ ফুট রাস্তার ২০ ফুট রাস্তা কেটে কাঁটা গাছ ও দু’পাশে বাঁশ দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছে। এতে রমজান মাসে ওই বাড়ির মানুষ হাটবাজার, হাসপাতালে, প্রাত্যহিক কাজ করতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বয়োবৃদ্ধ মানুষরা মসজিদে নামাজ পড়তে যেতে পারছেন না। এছাড়াও স্কুল, কলেজ, মাদরাসা পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছে না। তারা চরম কষ্টে দিন পার করছে।

চলার রাস্তা কেটে বাঁশের বেড়া

স্থানীয় বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিলদার পেয়ার আহমেদ জানান, এই বাড়ির লোকমান ড্রাইভারের কাছ থেকে ১০ বছর আগে ৬ শতাংশ সম্পত্তি ক্রয় করে যার মধ্যে এক শতাংশ সম্পত্তি এ বাড়ির চলাচলের পথের জন্য ব্যবহার হয়ে আসছিল। ওই সম্পত্তি বিক্রির সময় বারবার লোকমান ড্রাইভার এক শতাংশ বাদ দিয়ে রেজিস্ট্রি করতে চাইলেও কাগজে রেকর্ড করা ছয় শতাংশ সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করেন একই বাড়ির কবির আহমেদের ছেলে মাঈন উদ্দিন।

ওই সম্পত্তি বিক্রির সময় লোকমান ড্রাইভারকে পাঁচ শতাংশ সম্পত্তির মূল্য পরিশোধ করেন ক্রেতা তবুও ছয় শতাংশ দাবি করে প্রথম রমজানের দিন হঠাৎ কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই অনেক লোকজন এনে বহু বছরের পুরোনো রাস্তার প্রায় ২০ ফুট কেটে জমির সমান করে ফেলে। শুধু তাই নয়, ওই কাটা জায়গায় কাঁটা গাছ ও বাঁশ দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে চলাচল বন্ধ করে দেয়। এতে রমজান মাসে চরম কষ্টে দিন পার করছে বাড়ির বাসিন্দারা।

ওই বাড়ির নজরুল ইসলাম জানান, গত ৩০ বছর ধরে বাড়ির শত শত নারী-পুরুষ এ পথে চলাচল করে এসেছে। বিনা নোটিশে কিংবা কোনো ধরনের কথা ছাড়াই গায়ের জোরে রাস্তাটি কেটে নেওয়ায় স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রী ও শিশুরা এক ধরনের গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে।

চলার রাস্তা কেটে বাঁশের বেড়া

স্থানীয় ইউপি সদস্য ইকবাল হোসেন সবুজ জানান, এটি একটি অমানবিক কাজ। বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে ছুটে যান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মজিবুল হক রিপন। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছেন।

ফাজিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মজিবুল হক রিপন বলেন, খবর পেয়ে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে যান। যেহেতু এ সড়কে দীর্ঘ বছর ধরে ওই বাড়ির লোকজন চলাচল করেছে সেহেতু রাস্তাটি না কেটে উভয়পক্ষ সমঝোতার মধ্য দিয়ে সমাধান করা যেত। এছাড়া রমজান মাস, এভাবে চলাচলের পথ কেটে ওই পথে কাঁটা ও বাঁশ দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করার বিষয়টি মানবিক মনে হয়নি। বিষয়টি যখন আদালতের বিষয় বিবাদী পক্ষ বলেছে সেহেতু সার্বিক বিষয়টি আদালতকে অবহিত করলে ন্যায়বিচার প্রাপ্ত হবে।

এ বিষয়ে জানতে মাঈন উদ্দিনের ব্যবহৃত নম্বরে একাধিকবার ফোন করলেও পাওয়া যায়নি।

আবদুল্লাহ আল-মামুন/এফএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।