আন্দোলনে গুলি করে হত্যা

নিজাম হাজারীকে প্রধান আসামি করে মামলা, অজ্ঞাত আরও কয়েকশ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ফেনী
প্রকাশিত: ০২:২৩ পিএম, ১৫ আগস্ট ২০২৪

ছাত্র আন্দোলনে গুলি করে হত্যার ঘটনায় ফেনীতে তিনটি মামলা হয়েছে। এতে প্রধান আসামি করা হয়েছে সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীকে। এছাড়া আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ ৯৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এর মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গুলিতে ফেনীর মহিপালে শিক্ষার্থী ছাইদুল ইসলাম নিহতের ঘটনায় মামলা হয়। নিহতের বাবা রফিকুল ইসলাম ৯৪ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ১০০-১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বুধবার (১৪ আগস্ট) রাতে ফেনী মডেল থানায় এ মামলা করেন। এ মামলায় জেলার অন্তত ৩০ জনপ্রতিনিধিকে আসামি করা হয়েছে।

তাদের মধ্যে রয়েছেন- সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল, ফেনী পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ছনুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান করিম উল্লাহ বিকম ওরফে রেন্সু করিম, ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি জিয়াউদ্দিন বাবলু, শর্শদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি জানে আলম, ধলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার আহমদ মুন্সী, ফেনী পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক আশরাফুল ইসলাম মোহন প্রকাশ কালা মোহন, জেলা যুবলীগের সভাপতি ও দাগনভূঞা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন, ফাজিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুল হক রিপন, পাঁচগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক লিটন, ফেনী পৌর ১৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আমির হোসেন বাহার, ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর লুৎফুর রহমান খোকন হাজারী, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তোফায়েল আহমেদ তপু, সোনাগাজীর মঙ্গলকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন বাদল, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আবদুল মোতালেব রবিন প্রমুখ।

এ বিষয়ে ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, এখন পর্যন্ত তিনজন বাদী হয়ে পৃথক মামলা করেছেন। এ বিষয়ে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এর আগে মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) মহিপালে আরেক নিহত শিক্ষার্থী জাকির হোসেন শাকিলের মা কোহিনূর আক্তার বাদী হয়ে ৭১ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ১৫০-২০০ জনকে অজ্ঞাত করে ফেনী মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।

এছাড়া সোমবার (১২ আগস্ট) রাতে অটোরিকশাচালক মো. সবুজ নিহতের ঘটনায় তার ভাই মো. ইউসুফ ৬৫ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ৪০০ জনকে আসামি করে ফেনী মডেল থানায় আরেকটি হত্যা মামলা করেন। ছাত্রদের দিকে গুলি করার নির্দেশনা ও অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগে নিজাম হাজারীকে এ মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে।

৪ আগস্ট অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মহিপাল এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছিলেন শিক্ষার্থীরা। একই সময়ে শহরের ট্রাংক রোডে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। দুপুর ২টার দিকে মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মহিপাল ফ্লাইওভারের দিকে এগোতে থাকলে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

এসময় মুহুর্মুহু গুলি, ককটেল বিস্ফোরণে চারপাশ প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত থেমে থেমে সেখানে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হওয়া ছাড়াও ইটপাটকেলের আঘাতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, পথচারী ও সাংবাদিকসহ আহত হন দেড় শতাধিক। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৯ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।

আবদুল্লাহ আল-মামুন/জেডএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।