ফেনীতে ছাত্র আন্দোলনে গুলি
১৬২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা, প্রধান আসামি নিজাম হাজারী
পৃথক পাঁচটি হত্যা মামলায় ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীকে প্রধান আসামি করে এক হাজার ৬২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
ফেনীর মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের গুলিতে নিহতের ঘটনায় নতুন করে আরও দুটি মামলা হয়।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) মহিপালে নিহতদের মধ্যে ডিগ্রি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সরোয়ার জাহান মাসুদের মা বিবি কুলসুম বাদী হয়ে ১৩৪ জনকে আসামি করে ও আরও ১৫০-২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ফেনী মডেল থানায় মামলা করেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে নিহত ফেনী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ইশতিয়াক আহমেদ শ্রাবণের দাদা মো. জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া ১০৯ জনকে আসামি করে ও আরও ১৫০-২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ফেনী মডেল থানায় আরেকটি মামলা করেন।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- ফেনী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল, ফেনী পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, ফেনী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ছনুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান করিম উল্লাহ বিকম ওরফে রেন্সু করিম, যুবলীগ নেতা জিয়া উদ্দিন বাবলু প্রমুখ।
এ ব্যাপারে ফেনী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, মামলার ঘটনায় পুলিশের তদন্ত শুরু হয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে পৃথক তিনটি মামলায় জেলার অন্তত ৩০ জন জনপ্রতিনিধিসহ ৯৮০ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় ছাত্রদের দিকে গুলি করার নির্দেশনা ও অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম হাজারীকে প্রধান আসামি করা হয়।

৪ আগস্ট অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মহিপাল এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছিলেন আন্দোলনকারীরা। একই সময়ে শহরের ট্রাংক রোডে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
দুপুর দুপুর ২টার দিকে মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মহিপাল ফ্লাইওভারের দিকে এগোতে থাকলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এসময় মুহুর্মুহু গুলি, ককটেল বিস্ফোরণে চারপাশ প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত থেমে থেমে সেখানে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়।
সংঘর্ষের একপর্যায়ে মহিপালের পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হওয়া ছাড়াও ইটপাটকেলের আঘাতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, পথচারী ও সাংবাদিকসহ আহত হন দেড় শতাধিক। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ফেনীতে ৯ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
আবদুল্লাহ আল-মামুন/জেডএইচ/এমএস