ধানের শীষ বর্জনের ঘোষণা গরিনাবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির


প্রকাশিত: ০৯:৩১ এএম, ০১ মে ২০১৬

পঞ্চগড়ে অর্থের বিনিময়ে প্রতীক বরাদ্দের প্রতিবাদে ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীরা ধানের শীষ প্রতীক বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। শনিবার সদর উপজেলার ১০নং গরিনাবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপি সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মন্ডলের বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে নেতারা এ ঘোষণা দেন।

তাদের দাবি, তৃণমূল নেতাদের মতামত অপেক্ষা করে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে জাতীয় পার্টির একজনকে গরিনাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তৃণমূল মতামতকে অপেক্ষা করে তার কাছে ধানের শীষ প্রতীক বিক্রি করা হয়েছে।  

সংবাদ সম্মেলনে গরিনাবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আয়ুব আলী আনছারী, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন, প্রচার সম্পাদক মো. আব্দুর রহমান, ইউনিয়ন যুবদল সভাপতি মকসেদুর রহমান, ছাত্রদল সভাপতি আবু হানিফ, কৃষকদল নেতা মনোয়ার হোসেন দীপুসহ ইউনিয়ন পর্যায়ে বিভিন্ন স্তরের শতাধিক নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্মেলনে ইউনিয়ন বিএনপির নেতারা অভিযোগ করে বলেন, আমরা বর্তমান সময়ের রাজনৈতিক প্রতিকূল পরিবেশে প্রায় সাত বছর ধরে নানাভাবে বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ রাখার চেষ্টা করেছি। পঞ্চম দফার ইউপি নির্বাচনে আমাদের বেশ প্রস্তুতি রয়েছে।

কেন্দ্রীয় নির্দেশনামতে ইউনিয়ন বিএনপির পক্ষ থেকে সভাপতি আয়ুব আলী আনছারী এবং উপজেলা কৃষকদল নেতা মনোয়ার হোসেন দীপুর নাম চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এদের একজনকে ধানের শীষ প্রতীক দেয়া হলে এখানে অবশ্যই বিএনপি জয়লাভ করবে। কিন্তু কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা ও সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারের আস্থাভাজন স্থানীয় কয়েকজন বিএনপি নেতা মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে আলতামাশ হোসেন লেলিন নামে জাতীয় পার্টির একজনকে ধানের প্রতীক বরাদ্দের ব্যবস্থা করেছেন।

এজন্য ইউনিয়ন বিএনপির পক্ষ থেকে আসন্ন ইউপি নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক বর্জনের ঘোষণা দেয়া হয়। প্রয়োজনে তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নিবেন বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়।

গরিনাবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আয়ুব আলী আনছারী বলেন, ইউনিয়ন বিএনপির তিন জনের স্বাক্ষর দিয়ে আমরা যাদের নাম প্রস্তাব করেছি তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি। তৃণমূল মতামতকে অপেক্ষা করে এবং গঠনতন্ত্র বহিভূতভাবে দলের বাইরে একজনকে কেন মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে তা আমরা জানি না। যাকে বা যাদের ধানের শীষ প্রতীক দেয়া হচ্ছে তাদের সঙ্গে আমরা একমত পোষণ করি না। এজন্য এই মুহূর্ত থেকেই আমরা তাদের আমরা বর্জন করেছি।

ইউনিয়ন বিএনপি সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মন্ডল বলেন, এখানে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন এবং প্রতীক বরাদ্দের ব্যাপারে বিএনপির কোনো গঠনতন্ত্র মানা হয়নি। তৃণমূল মতামতকে অপেক্ষা করা হয়েছে। যাকে ধানের শীষ দেয়া হচ্ছে তিনি বিএনপির পাঁচ টাকার সদস্যও নন।

টাকার বিনিময়ে জেলার বিএনপি নেতা এমএ মজিদ, আনোয়ার হোসেন এবং জাকির হোসেনসহ কতিপয় নেতা তার কাছে ধানের শীষ প্রতীক বিক্রি করেছেন। কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা ও সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারের মদদে যেহেতু তাকেই মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে। কাজেই আমরা এখানে ধানের শীষ প্রতীক বর্জন করেছি।

ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জাকির হোসেন বলেন, আমাদের ইউনিয়নে বিএনপি বেশ সংগঠিত। যে প্রার্থীর জন্য আমাদের মনোনয়ন প্রত্যাশা ছিল, তা পূরণ হয়নি। এটা একটা ভুল এবং হঠকারী সিদ্ধান্ত অন্যায়ভাবে আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। এজন্য এখানকার নেতাকর্মী ক্ষুব্ধ এবং ব্যাথিত। সংগঠন ঠিক রাখার স্বার্থে সীদ্ধান্তটি পুনঃবিবেচনা করা প্রয়োজন।

এ ব্যাপারে বিএনপি নেতা এমএ মজিদ বলেন, অর্থ লেনদেনের কথা কেউ প্রমাণ করতে পারলে যে কোনো শাস্তি মাথা পেতে নেব। গরিনাবাড়ি ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আলতামাশ হোসেন লেলিন জেলা বিএনপির সদস্য। তার বাবাও বিএনপির একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। এজন্যই তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। তিনিই জয়লাভ করবেন আশা করি।

বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, যারা মনোনয়ন পান না, তারা নানান অভিযোগ করেন। পঞ্চগড়ের বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জনপ্রিয় নেতাদের মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে। আমরা যে যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছি এটা ভোটের পর প্রমাণিত হবে।

প্রসঙ্গত, আগামী ২৮ মে পঞ্চম দফায় পঞ্চগড় সদর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য ৩ মে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দানের শেষ তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

সফিকুল আলম/এআরএ/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।