ওএমএসের ১৫ কেন্দ্র বন্ধ

নওগাঁয় খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নওগাঁ
প্রকাশিত: ০৩:৫২ পিএম, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

নওগাঁ পৌরসভায় ওএমএস’র সবকটি কেন্দ্র চালুর দাবিতে খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে হতদরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। পরে জেলা সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক আমিনুল কবিরের আশ্বাসে অফিস চত্বর থেকে তারা সরে যান।

বিক্ষুব্ধদের অভিযোগ, পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটের আগে নওগাঁ পৌরসভায় ১৮ কেন্দ্রে ওএমএস ডিলারদের মাধ্যমে হতদরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষদের মাঝে স্বল্পমূল্যে চাল ও আটা দিতো সরকার। ৫ আগস্টের পর ১৮টি কেন্দ্রের মধ্যে হঠাৎ ১৫ কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে খাদ্য বিভাগ। এতে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। তাই ওএমএস নিয়ে নোংরা রাজনীতি বন্ধ করে অনতিবিলম্বে সবকটি কেন্দ্র চালুর দাবি তাদের।

শহরের বালুডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে আসা বিক্ষোভে অংশ নেওয়া রিকশাচালক সোহেল রানা বলেন, সারাদিন রিকশা চালিয়ে যে আয় হয় সেটা দিয়ে টিকে থাকা কষ্টসাধ্য। ওএমএস কর্মসূচি চালু অবস্থায় কম দামে চাল ও আটা কিনে কিছুটা সামাল দিতাম। সেই চাল-আটা টানা চার মাস ধরে পাচ্ছি না। তাই দুই বেলা শান্তিতে পেটপুরে খাওয়া হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে পেটের ক্ষুধায় ফুড অফিসে এসে দাঁড়িয়েছি। কী কারণে এটি বন্ধ রয়েছে সে কারণ কর্মকর্তাদের কেউই স্পষ্টভাবে বলতে চাইছেন না।

নওগাঁয় খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ

ইঁদুর বটতলী এলাকা থেকে আসা মানোয়ারা বেগম বলেন, জীবিকার তাগিদে বৃদ্ধ বয়সেও রাস্তার পাশে ফলমূল বিক্রি করে আয় করি। সেই রোজগার দিয়ে ৫৪ টাকা কেজি দরে চাল কিনে খাওয়ার সাধ্য আমাদের নেই। তাই ওএমএস-ই শেষ ভরসা। গরীবের সেই চাল-আটা নিয়ে নোংরা রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। নয়তো আমাদের অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটানো ছাড়া উপায় থাকবে না।

শহরের বিভিন্ন মহল্লা থেকে আসা শাহজাহান, গোলাম মোস্তফা ও পিন্টু জানান, পাশের জেলাগুলোতে পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটের পরেও পূর্বের ডিলার দিয়েই ওএমএস সচল রেখেছে খাদ্য বিভাগ। অথচ এখানে জেলা প্রশাসন অযৌক্তিকভাবে নতুন ডিলার নিয়োগের নামে সময়ক্ষেপণ করে যাচ্ছে। তাদের এ রাজনীতির মাশুল দিতে হচ্ছে নিম্ন-আয়ের মানুষদের। আগামী সপ্তাহের মধ্যে নওগাঁ পৌরসভার সবকটি কেন্দ্র আগের মতো চালু না করলে আমরা প্রয়োজনে আবারও রাস্তায় নামবো।

জেলা সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক আমিনুল কবির বলেন, বন্ধ থাকা ওএমএস কেন্দ্র চালুর দাবি নিয়ে অফিস চত্বরে আসা ভোক্তাদের কথা শুনেছি। তাদের দাবির বিষয়গুলো জেলা ওএমএস কমিটি বরাবর উত্থাপন করা হবে। শীঘ্রই ফলপ্রসূ সিদ্ধান্ত নিয়ে এ সংকট সমাধান করা হবে।

জেলা প্রশাসক আব্দুল আউয়াল বলেন, পৌর এলাকার অধিকাংশ ওএমএস ডিলার সঠিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার প্রেক্ষিতে ১৫টি কেন্দ্র বন্ধ রাখা হয়েছিলো। সেই সঙ্গে নতুন ডিলার নিয়োগের প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া হয়। প্রয়োজনে যৌথ মতামতের ভিত্তিতে আবারও কেন্দ্রগুলো চালু করা হবে।

আরমান হোসেন রুমন/আরএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।