বজ্রপাত রোধে বাসা-বাড়িতে বজ্র নিরোধক দণ্ড রাখার পরামর্শ
বাসা-বাড়ির ছাদে মোবাইল টাওয়ার আছে সেগুলো যেন সুরক্ষিত ও নিরাপদ হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এছাড়া বজ্রপাত প্রতিরোধী বজ্র নিরোধক দণ্ড বাসা-বাড়িতে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম।
তিনি আরও বলেন, বজ্রপাতের সময় কোনো জায়গায় আশ্রয় নিতে হবে। ইলেকট্রনিক্স উপাদানগুলে যেমন- ফ্রিজ, মোবাইল ফোন, ডিশ লাইন প্রভৃতির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখতে হবে।
হাওরাঞ্চলে ঘন ঘন বজ্রপাত নিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় আলোচনাকালে মোবাইল ফোনে জাগো নিউজকে তিনি এসব পরামর্শমূলক কথা বলেন।
অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম আরো বলেন, পরিবেশের ভারসাম্যহীনতা, জলবায়ু পরিবর্তন এসব কারণে মেঘের মধ্যে তড়িৎ প্রবাহিকা বৃদ্ধি পায়। যে কারণে বজ্রপাতের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। বজ্রপাতে আতঙ্কিত না হয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্থান নিতে হবে।
হাওরাঞ্চলে অত্যাধিক বজ্রপাতের বিষয়ে তিনি বলেন, জনবসতিপূর্ণ এলাকার বিদুৎ পরিবাহী উপাদান যেমন-গাছ,বাড়ি-ঘর এসব থাকে। বজ্রপাতের সময় এসবের মধ্যে তড়িৎ প্রবাহ ছড়িয়ে যাওয়ায় জনবসতিপূর্ণ এলাকায় বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা কম হয়ে থাকে। তবে হাওর অঞ্চলে খোলা আকাশের নিচে বিদুৎ পরিবাহী কোনো উপাদান থাকে না। ফলে বজ্রপাত সরাসরি মানুষকে আঘাত করে।
এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে হাওর অধ্যুষিত সুনামগঞ্জ জেলাজুড়ে ঘন ঘন বজ্রপাতের ঘটনা ঘটছে। একই সঙ্গে বজ্রপাতে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। এক মাসে সুনামগঞ্জ জেলায় বজ্রপাতে ৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২০ জন।
গত ১৭ এপ্রিল থেকে ১৬ মে (সোমবার) পর্যন্ত এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। জেলার সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গতমাসের ১৭ এপ্রিল রোববার ধর্মপাশা উপজেলার হলিদাকান্দা গ্রামের শের আলী (৩৫) নামের এক কৃষক গ্রাম পাশ্ববর্তী হাওরে ধানা কাটার সময় বজ্রপাতে নিহত হন।
৬ মে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার পলাশ ইউনিয়নের রনবিদ্যা গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে জিয়াউল হক (৪২) নামে এক কৃষক বাড়ির আঙ্গিনায় ধান শুকানো কাজে থাকাবস্থায় বজ্রপাতে নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হয় আরও দুইজন।
১৩ মে শুক্রবার জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের কামারখাল গ্রামের মৃত আব্দুর রউফের ছেলে আমির উদ্দিন (৩৫) বাড়ির সামনে ধান শুকানোর সময় বজ্রপাতে মৃত্যু হয়।
একইদিনে একই উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের বাগময়না গ্রামের আব্দুল তাহিদের ৯ বছরের শিশুপুত্র আব্দুস সামাদের বজ্রপাতে মৃত্যু হয়।
সর্বশেষ ১৬ মে সোমবার তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের সীমান্ত সংলগ্ন মোকসেদপুর গ্রামে ফারুক মিয়া (১৯) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়।
এছাড়া গত ২২ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ছাতক উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড়ে টিনে কাটা পড়ে চরমহল্লা ইউনিয়নের খরিদিচর গ্রামের আব্দুল হকের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৪৫) নিহত হয়েছেন।
২৯ এপ্রিল শুক্রবার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের ফজর আলীর কন্যা তানজিমা আক্তার (১৩) বসতঘরে চাপা পড়ে নিহত হয়।
১লা মে রোববার অপরদিকে কালবৈশাখী ঝড়ে হাওরে নৌকাডুবে তৌফিক মিয়া (২৫) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। তিনি তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের বানিয়াগাঁও গ্রামের আব্দুল নুর মিয়ার ছেলে।
এ প্রসঙ্গে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম সোমবার সন্ধ্যায় জাগো নিউজকে বলেন, পরিবেশের ভারসাম্যহীনতা, জলবায়ু পরিবর্তন এসব কারণে মেঘের মধ্যে তড়িৎ প্রবাহিকা বৃদ্ধি পায়। যে কারণে বজ্রপাতের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। বজ্রপাতে আতঙ্কিত না হয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্থান নিতে হবে।
হাওরাঞ্চলে অত্যাধিক বজ্রপাতের বিষয়ে তিনি বলেন, জনবসতিপূর্ণ এলাকার বিদুৎ পরিবাহী উপাদান যেমন-গাছ,বাড়ি-ঘর এসব থাকে। বজ্রপাতের সময় এসবের মধ্যে তড়িৎ প্রবাহ ছড়িয়ে যাওয়ায় জনবসতিপূর্ণ এলাকায় বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা কম হয়ে থাকে। তবে হাওর অঞ্চলে খোলা আকাশের নিচে বিদুৎ পরিবাহী কোনো উপাদান থাকে না। ফলে বজ্রপাত সরাসরি মানুষকে আঘাত করে।
তিনি আরও বলেন, বজ্রপাতের সময় কোনো জায়গায় আশ্রয় নিতে হবে। ইলেকট্রনিক্স উপাদানগুলে যেমন- ফ্রিজ, মোবাইল ফোন, ডিশ লাইন প্রভৃতির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখতে হবে। যেসব বাসা-বাড়ির ছাদে মোবাইল টাওয়ার আছে সেগুলো যেন সুরক্ষিত ও নিরাপদ হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এছাড়া বজ্রপাত প্রতিরোধী বজ্র নিরোধক দণ্ড বাসা-বাড়িতে রাখার পরামর্শ দেন আনোয়ারুল ইসলাম।
এমএএস/পিআর