অবশেষে শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিললো

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৩০ পিএম, ২৯ মে ২০২৫
ডিএসই এবং সিএসইতে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে/ প্রতীকী ছবি

টানা পতন থেকে বেরিয়ে অবশেষে দেশের শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (২৯ মে) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনের অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে সবকয়টি মূল্যসূচক। তবে দুই বাজারেই কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।

এর আগে চলতি সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। একই সঙ্গে দেখা দেয় লেনদেন খরা। এমন টানা পতনের পর শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিললেও লেনদেনের গতি ফেরেনি। বরং লেনদেন খরা অব্যাহত রয়েছে। ডিএসইতে টানা ১৪ কার্যদিবস তিনশ কোটি টাকার কম লেনদেন হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে এমন টানা লেনদেন খরা শেয়ারবাজারে আর দেখা যায়নি।

টানা পাঁচ কার্যদিবস দরপতনের পর আজ বৃহস্পতিবার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই দাম কমার তালিকায় চলে আসে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। এতে সূচকও ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। ফলে আবারও পতনের শঙ্কা পেয়ে বসে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে।

তবে বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে বদলে যেতে থাকে বাজারের চিত্র। দাম কমার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে থাকে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত থাকে। ফলে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি সবকয়টি মূল্যসূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষে হয়।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২২ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৬৩৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২১ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৭২৯ পয়েন্টে উঠে এসেছে। এছাড়া ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ১১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

দিনের লেনদেন শেষে সব খাত মিলিয়ে ডিএসইতে ২২২ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৯টির। এছাড়া ৭৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৩০টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৫৩টির দাম কমেছে এবং ৩৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৪৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ার বিপরীতে ১৮টির দাম কমেছে। এছাড়া ১৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৪৫টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৮টির এবং ২৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এছাড়া তালিকাভুক্ত ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৩টির দাম কমেছে এবং ১৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়লেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৪৭ কোটি ৪২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২৬৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ১৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে টানা ১৪ কার্যদিবস ডিএসইতে তিনশ কোটি টাকার কম লেনদেন হলো।

এদিন ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেনে হয়েছে মিডল্যান্ড ব্যাংকের শেয়ার। কোম্পানিটির ৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকোর শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকার। ৭ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ওরিয়ন ইনফিউশন, বিচ হ্যাচারি, শাইনপুকুর সিরামিক, আইএফআইসি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, লাভেলো আইসক্রিম এবং অগ্নি সিস্টেম।

অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ২৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৭টির এবং ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৮ কোটি ৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা।

এমএএস/কেএসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।