পণ্য পরিবহন নীতিমালা দ্রুত বাস্তবায়ন চায় বিসিভিওএ-কোয়াব

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:৪৯ পিএম, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে বিসিভিওএ ও কোয়াবের সংবাদ সম্মেলন/ছবি: জাগো নিউজ

জাহাজে পণ্য পরিবহন নিয়ে সরকারের পণ্য পরিবহন নীতিমালা-২০২৪-এর দ্রুত বাস্তবায়ন চায় বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিভিওএ) এবং কোস্টাল শিপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব)।

একই সঙ্গে সংগঠন দুটি লাইটার জাহাজ পরিচালনাকারী বেসরকারি সংস্থা বাংলাদেশ ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট কো-অরডিনেশন সেলের (বিডব্লিউটিসিসি) পরিচালনা পরিষদ সংখ্যাগরিষ্টের ভিত্তিতে গঠন, বকেয়া ডেমারেজের ২১১ কোটি টাকাসহ চলমান সব ভাড়া পরিশোধ, পণ্য পরিবহনকারী জাহাজকে ভাসমান গুদাম হিসেবে ব্যবহার বন্ধ ও সব জাহাজের নৌ-নীতিমালা অনুযায়ী সিরিয়ালভুক্ত হয়ে চলার দাবি তুলেছে।

রোববার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান বিসিভিওএ’র সাধারণ সম্পাদক মেহবুব কবির। এসময় উপস্থিত ছিলেন কোয়াবের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশিদ আলম, বিসিভিওএ’র সহ-সভাপতি জি এম সরোয়ার, যুগ্ম সম্পাদক মাসুদ প্রমুখ।

লিখিত বক্তব্যে মেহবুব কবির বলেন, পণ্য পরিবহন নীতিমালা অনুযায়ী সিরিয়ালে পণ্য পরিবহন করার কথা থাকলেও ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলের কতিপয় পণ্যের এজেন্ট সিন্ডিকেট সিরিয়ালবিহীন পণ্য পরিবহন করছেন। আমরা নীতিমালা অনুযায়ী সিরিয়ালে বসে থেকেও দু-তিন মাসে এক ট্রিপ পণ্য পরিবহন করছি। অন্যদিকে সিরিয়ালবিহীন চলাচলকারী জাহাজগুলো অবৈধভাবে মাসে তিন-চার ট্রিপ পণ্য পরিবহন করছে। কিছু কারখানার মালিক নীতিমালা বহির্ভূতভাবে চার্টার (ভাড়া করা) জাহাজ দিয়ে পণ্য পরিবহন করছেন।

তিনি আরও বলেন, কিছু পণ্যের এজেন্ট জাহাজ মালিকদের গেল ২০২৩ সাল পর্যন্ত নিষ্পত্তিকৃত ২১১ কোটি টাকা পরিশোধ করছেন না। পাশাপাশি তারা জাহাজ মালিকদের পরিবহন ভাড়া বাবদ পাওনা প্রায় ২০০ কোটি টাকাও পরিশোধ করছেন না। নিষ্পত্তিকৃত ডেমারেজের টাকার বিষয়ে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিদ্ধান্ত দিলেও এখনো সেই পাওনা টাকা পরিশোধ করা হয়নি। পরে এ বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। গঠিত কমিটিও জাহাজ মালিকদের টাকা পরিশোধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয়। কিন্তু চলতি বছরে এক সভায় কিছু এজেন্ট মালিক সেই টাকা দেবেন না বলে জানান। যার প্রতিবাদ আমরা করেছি।

আরও পড়ুন
চীনা প্রযুক্তিতে ডিজিটাল অর্থনীতির যুগে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ
যুক্তরাষ্ট্র থেকে এলো আরও ৬১ হাজার টন গম

মেহবুব কবির দাবি করেন, জাহাজ মালিকদের শত শত কোটি টাকা আটকে এজেন্ট মালিকরা একটির পর একটি জাহাজ কিনছেন। অথচ, তাদের জাহাজগুলো স্ক্রাপ হয়ে যাচ্ছে। হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে একসময় জাহাজের সংকট প্রকট হয়ে পড়বে বলে জানান তিনি।

পণ্য পরিবহন নীতিমালা-২০২৪-এর নীতি-নির্ধারণী কমিটিতে জাহাজের সংখ্যার অনুপাতের ভিত্তিতে প্রতিনিধি নির্ধারিত হওয়ার কথা থাকলে তা করা হয়নি বলে জানান তিনি।

বিসিভিওএ’র সাধারণ সম্পাদক জানান, তাদের জাহাজগুলোকে কতিপয় পণ্যের এজেন্ট ভাসমান গুদাম বানিয়ে বাজারে পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অবৈধ মুনাফা অর্জন করছেন। যেখানে নিয়ম অনুযায়ী ছোট জাহাজ সর্বোচ্চ আট দিনে এবং বড় জাহাজ ১১ দিনে খালি করার কথা থাকলেও ১০ থেকে ১১ মাস ভাসমান গুদাম করে রাখছেন। কিন্তু এজন্য পণ্যের এজেন্ট কোনো টাকা দেন না। একটি জাহাজের সর্বনিম্ন স্টাফ বেতন প্রতি মাসে দুই লাখ টাকা হলে ১১ মাসে হয় ২২ লাখ টাকা। তাহলে মালিকরা কীভাবে জাহাজ পরিচালনা করবেন? এসব সমস্যা সমাধান না হলে অচিরেই আরও জাহাজ স্ক্রাপ হয়ে যাবে। বাকি যা থাকবে সেগুলোর মালিকরা বেতন, জ্বালানি তেল, মেরামত ও অন্যান্য খরচ পরিশোধ করতে না পারলেও জাহাজ চালানো সম্ভব না।

মেহবুব কবির বলেন, এসব সমস্যা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সমাধান করতে হবে। অন্যথায় ১৫ দিন পর জাহাজ চলাচল বন্ধ হলে এর দায়-দায়িত্ব যথাযথ কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে। এর জন্য তারা দায়ী থাকবেন না।

এনএইচ/একিউএফ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।