শেয়ারবাজারে সূচক বাড়লেও কমেছে লেনদেন
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচক বেড়েছে। একই সঙ্গে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। তবে সিএসইতে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের স্থান হয়েছে দাম কমার তালিকায়। উভয় বাজারেই কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
এর আগে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেও মূল্যসূচকের পতন হয়। একই সঙ্গে ডিএসইতে লেনদেন কমে দুইশো কোটি টাকার ঘরে চলে আসে। তবে দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার ফের মূল্যসূচকের পতন হয়।
এ পরিস্থিতিতে বুধবার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকে। ফলে দাম বাড়ার তালিকা বড় হওয়ার পাশাপাশি মূল্যসূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৭৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৬টির। আর ৮৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৯৯টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৬৩টির দাম কমেছে এবং ৪৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৪২টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ২০টির দাম কমেছে এবং ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৩৭টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৩টির এবং ১৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৫টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১২টির দাম কমেছে এবং ১৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২২ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৮৮৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৬ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৯ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৮৮২ পয়েন্টে উঠে এসেছে।
মূল্যসূচক বাড়লেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৩৮ কোটি ১০ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪০৭ কোটি ৪১ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৬৯ কোটি ৩১ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সিটি ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৩ কোটি ১০ লাখ টাকার। ১২ কোটি ৯৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে রহিমা ফুড।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সায়হান কটন, মালেক স্পিনিং, ওরিয়ন ইনফিউশন, লাভেলো আইসক্রিম, ফাইন ফুডস, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ এবং উত্তরা ব্যাংক।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ২১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৬৭ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৩টির এবং ২৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।
এমএএস/এমকেআর/এমএস