হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ১০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান
একটি অত্যাধুনিক কারখানা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০১১ সালে হরিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ওলিপুরে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের কারখানা ‘হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক’ এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
২০১৪ সালে এখানে সীমিত পরিসরে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয় এবং গত এক বছরের ব্যবধানে এই কারখানায় প্রায় ১০ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
কারখানার কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হলে বিপুল পরিমাণ জনবল নিয়োগ করা হবে। ফলে অত্র এলাকার বেকারত্ব কিছুটা লাঘব হবে এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য ও গৃহস্থালি প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদন, বাজারজাতকরণ এবং রপ্তানিতে দেশের শীর্ষস্থানে রয়েছে। বর্তমানে ১০৮টি দেশে এসব পণ্য রফতানি করা হচ্ছে। খাদ্য এবং প্লাস্টিক পণ্যের বাইরে নতুন কিছু পণ্য উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে ‘হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক’ স্থাপিত হয়।
প্রাণ এর প্রডাকশন লাইনে যেসব পণ্য উৎপাদন করার পরিকল্পনা রয়েছে সেগুলো হলো, বিস্কুট, বেকারি, লিকুইড গ্লুকোজ, বেভারেজ, কনফেকশনারি ও ফ্লেক্সিবল প্যাকেজিং। এছাড়া আরএফএল এর লাইনে ইলেকট্রিক ক্যাবল, ইলেকট্রনিক্স পণ্য, মেলামাইন পণ্য, বাইসাইকেল, মেডিকেল যন্ত্রপাতি, পিভিসি, মল্ডেড প্লাস্টিক, টেক্সটাইল ও টয়লেট্রিজ সামগ্রী।
গত এক বছরে প্রাণ এর প্রডাকশন লাইনে বিভিন্ন ধরণের বিস্কুট, বেকারি, কনফেকশনারি, ফ্লেক্সিবল প্যাকেজিং এবং লিকুইড গ্লুকোজ উৎপাদিত হচ্ছে। এছাড়া আরএফএল এর প্রডাকশন লাইনে বাইসাইকেল, ক্যাবল, মেলামাইন পণ্য ও পিভিসি ফিটিংস উৎপাদিত হচ্ছে। ফ্যাক্টরির নির্মাণ কাজ শেষ হলে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য পণ্যের প্রডাকশন লাইন চালু করা হবে।
৬০০ বিঘা এলাকা জুড়ে অবস্থিত হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে আধুনিক সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান রয়েছে। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন প্লান্ট রয়েছে। এছাড়া বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য রয়েছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ইটিপি (ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট)। ফলে কারখানার সমস্ত বর্জ্য ইটিপির ম্যাধ্যমে পরিশোধিত হয়ে বাইরে যায়। বর্তমানে একটি ইটিপি চালু রয়েছে এবং আরো তিনটি নির্মাণাধীন রয়েছে। অন্যান্য প্রডাকশন লাইন চালু হওয়ার আগে সেগুলোর নির্মাণ কাজ পুরোপুরি শেষ হবে।
কারখানার পাশে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের একটি স্কুল রয়েছে। নার্সারি থেকে ক্লাস সিক্স পর্যন্ত সেখানে চালু রয়েছে। এই স্কুলে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছেলেমেয়ে ছাড়াও অত্র এলাকার ছাত্রছাত্রীরা পড়ার সুযোগ লাভ করছে। পর্যায়ক্রমে এই স্কুলে দশম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করা হবে।
এছাড়াও ভবিষ্যতে একটি কলেজ স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। কারখানায় কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্যে একটি ক্যান্টিন রয়েছে, সেখানে মাত্র দুই টাকার বিনিময়ে সবাইকে একবেলা খাবার প্রদান করা হয়। কারখানায় কর্মচারীদের থাকার জন্যে রয়েছে আবাসন ব্যবস্থা, এর বাইরে শিশুদের জন্যে রয়েছে ডে-কেয়ার সেন্টার। স্বাস্থ্য সেবার জন্যে রয়েছে একটি মেডিকেল সেন্টার। এছাড়াও মসজিদসহ রয়েছে নানান সুযোগ-সুবিধা।
মঙ্গলবার হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে আয়োজিত এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল, হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের জেনারেল ম্যানেজার এইচ এম মঞ্জুরুল হক, বাইসাইকেল প্লান্টের জেনারেল ম্যানেজার জাফর ইকবাল, আরএফএল এর সিনিয়র প্লান্ট ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, সিনিয়র ম্যানেজার প্রাণ-অ্যাডমিন এহসানুল হাবিবসহ প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং স্থানীয় সাংবাকিবৃন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
এএ/এমএএস/আরআই