মহামারিতে কেমন ব্যবসা করল বেক্সিমকোর তিন প্রতিষ্ঠান
মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপে জবুথবু অবস্থা বিশ্ব অর্থনীতির। গত বছরের শেষের দিকে আবির্ভাব হওয়া করোনাভাইরাস বাংলাদেশে আঘাত হানা শুরু করে চলতি বছরের মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে।
জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে করোনায় দেশের অর্থনীতিতে সরাসরি আঘাত না হানলেও মার্চ থেকে প্রভাব পড়া শুরু করে। অবশ্য বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ায় জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতেই অর্থনীতিতে করোনা পরোক্ষ প্রভাব ফেলে।
আর করোনা প্রকোপ ঠেকাতে ২৬ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত কয়েক দফায় সরকার টানা ৬৬ দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় কার্যত অর্থনীতির চাকা অনেকটাই অচল হয়ে যায়। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে ব্যবসা-বাণিজ্যে। অবশ্য এই মহামারির মধ্যেও কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান ভালো ব্যবসা করেছে।
এমনই একটি প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। ভালো ব্যবসা হওয়ায় চলতি হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (২০২০ সালের জানুয়ারি-মার্চ) শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছে। তবে তালিকাভুক্ত বেক্সিমকোর আরও দুটি কোম্পানির মধ্যে বেক্সিমকোর মুনাফায় এক প্রকার ধস নেমেছে। লোকসানে নিমজ্জিত বেক্সিমকো সিনথেটিক লোকসানের মধ্যেই রয়েছে।
কোম্পানি তিনটির পরিচালনা পর্ষদ সভা শেষে প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। মঙ্গলবার (২৩ জুন) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস
চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি মুনাফা করেছে ২ টাকা ২২ পয়সা, যা আগের বছরে একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৮৪ পয়সা। সে হিসেবে আগের বছরের তুলনায় শেয়ারপ্রতি মুনাফা বেড়েছে ৩৮ পয়সা।
তৃতীয় প্রান্তিকে মুনাফা বাড়ায় নয় মাসের হিসাবেও কোম্পানিটির মুনাফা আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে। ২০১৯ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত সময়ে কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৬ টাকা ৪৮ পয়সা। যা আগের বছরে একই সময়ে ছিল ৫ টাকা ৫১ পয়সা।
মুনাফার পাশাপাশি কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্যও আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে। চলতি বছরের মার্চ শেষে কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ৭৭ টাকা ৮৮ পয়সা, যা ২০১৯ সাল জুন শেষে ছিল ৭০ টাকা ৯৯ পয়সা।
এদিকে অপারেটিং ক্যাশ ফ্লোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের মার্চ সময়ে শেয়ারপ্রতি অপারিটিং ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ৯ টাকা ৮৩ পয়সা, যা ২০১৮ সালের সালের জুলাই থেকে ২০১৯ সালের মার্চ সময়ে ছিল ৬ টাকা ৪৮ পয়সা।
বেক্সিমকো
চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি মুনাফা করেছে ১২ পয়সা, যা আগের বছরে একই সময়ে ছিল ৪২ পয়সা। সে হিসেবে আগের বছরের তুলনায় শেয়ারপ্রতি মুনাফা কমেছে ৩০ পয়সা। অর্থাৎ কোম্পানিটির মুনাফায় ৭১ শতাংশ পতন হয়েছে।
তৃতীয় প্রান্তিকে মুনাফায় বড় নেতিবাচক প্রভাব পড়ায় নয় মাসের হিসাবেও কোম্পানিটি মুনাফা কমেছে। ২০১৯ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৬৬ পয়সা। যা আগের বছরে একই সময়ে ছিল ১ টাকা ২১ পয়সা।
মুনাফার পাশাপাশি কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্যও আগের বছরের তুলনায় কমেছে। চলতি বছরের মার্চ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ৬৯ টাকা ৪৬ পয়সা, যা ২০১৯ সাল জুন শেষে ছিল ৬৯ টাকা ৮৪ পয়সা।
এদিকে অপারেটিং ক্যাশ ফ্লোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের মার্চ সময়ে শেয়ারপ্রতি অপারিটিং ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ২২ টাকা ৩৮ পয়সা, যা ২০১৮ সালের সালের জুলাই থেকে ২০১৯ সালের মার্চ সময়ে ছিল ঋণাত্মক ৬৪ পয়সা।
বেক্সিমকো সিনথেটিক
চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি লোকসান করেছে ৬৫ পয়সা। আগের বছরে একই সময়ে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয় ৮১ পয়সা। সে হিসেবে আগের বছরের তুলনায় শেয়ারপ্রতি মুনাফা কমেছে ৯ পয়সা।
তৃতীয় প্রান্তিকে লোকসান করায় নয় মাসের হিসাবেে কোম্পানিটির লোকসানের পাল্লা ভারী হয়েছে। ২০১৯ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান করেছে ২ টাকা ৫ পয়সা। আগের বছরে একই সময়ে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয় ২ টাকা ৫৩ পয়সা।
লোকসানের পাশাপাশি কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্যও আগের বছরের তুলনায় কমেছে। চলতি বছরের মার্চ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা ৯ পয়সা, যা ২০১৯ সাল জুন শেষে ছিল ১৪ টাকা ১৩ পয়সা।
এদিকে অপারেটিং ক্যাশ ফ্লোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের মার্চ সময়ে শেয়ারপ্রতি অপারিটিং ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৭৮ পয়সা, যা ২০১৮ সালের সালের জুলাই থেকে ২০১৯ সালের মার্চ সময়ে ছিল ৯ পয়সা।
এমএএস/এসআর/পিআর