১০ মাসে ইউরোপের বাজারে ১৯.৪০ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৪৩ এএম, ১৮ জানুয়ারি ২০২৩
ফাইল ছবি

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে বিশ্বজুড়ে স্থবিরতা নেমেছিল। অনেক নামিদামি প্রতিষ্ঠানেও ঝুলেছিল তালা। মন্দা দেখা দেয় ব্যবসা-বাণিজ্য ও আমদানি-রপ্তানিতে। যার প্রভাব পড়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতেও। রপ্তানি আদেশ একেবারেই তলানিতে নামে। কারখানাগুলোর উৎপাদনও সীমিত হয়ে পড়ে। তবে করোনা পরিস্থিতি শিথিল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘুরে দাঁড়াতে থাকে অর্থনীতি চাকা। দেশের পোশাক রপ্তানিতেও আসে গতি। বাড়ে রপ্তানি আদেশ।

কিন্তু এমন সময়ই বাঁধে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যার সরাসরি প্রভাব পড়ে আন্তর্জাতিক বাজারে। বিশেষত, জ্বালানি তেলের দাম হয়ে ওঠে আকাশচুম্বী। দেখা দেয় গ্যাস সংকট। ব্যাহত হতে শুরু করে বিদ্যুৎ উৎপাদন। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে দেশের পোশাকশিল্পেও। বিপাকে পড়েন ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা। তবে এসময়েও যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের কদর কমেনি। বরং বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের প্রতিনিয়তই বাড়ছে নতুন নতুন বাজার।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে ‘অন্যায়’ করা পশ্চিমা ব্র্যান্ডগুলো কারা?

ইউরোপীয় পরিসংখ্যান সংস্থা, ইউরোস্ট্যাটের সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ৮৬ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে, এতে বছরওয়ারি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৪ দশমিক ৪১ শতাংশ।

একই সময়ে ইইউ বাংলাদেশ থেকে ১৯ দশমিক ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে। ইইউয়ের পোশাক আমদানির জন্য বাংলাদেশ দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎস। ২০২১ সালের জানুয়ারি-অক্টোবর সময়ের তুলনায় গত বছরের একই সময়ে বাংলাদেশ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পোশাক আমদানি বেড়েছে ৪১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। তবে চীন ২৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ শেয়ার নিয়ে ইইউতে সবচেয়ে বড় পোশাক সরবরাহকারীর অবস্থান ধরে রেখেছে।

আরও পড়ুন: ইউরোপীয় ইউনিয়নে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ১৬.৬১ শতাংশ

২০২২ সালের প্রথম ১০ মাসে চীন থেকে ইইউর পোশাক আমদানি বছরওয়ারি ২২ দশমিক ৪৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধিসহ ২৫ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। একই সময়ে তুরস্ক থেকে আমদানিও বছরওয়ারি ১২ দশমিক ৮২ শতাংশ বেড়েছে। তুরস্ক থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আমদানিও ১০ দশমিক ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। ভারত থেকে আমদানি ৪ দশমিক ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, বছরওয়ারি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ।

অন্যান্য শীর্ষ পোশাক সরবরাহকারী দেশগুলোর মধ্যে কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান, মরক্কো, শ্রীলঙ্কা এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আমদানি যথাক্রমে ৩৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ, ৩৩ দশমিক ০৫ শতাংশ, ২৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ, ৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ, ১৮ শতাংশ এবং ৩১ দশমিক ৭৬ শতাংশ বেড়েছে।

আরও পড়ুন: পোশাকখাতে অনেক চ্যালেঞ্জ, সুযোগ সীমাহীন

তৈরি পোশাকশিল্প মালিক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল জাগো নিউজকে বলেন, ক্যালেন্ডার বছরের তথ্য বিবেচনায় ২০২২ সালে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে একটি নতুন মাইলফলক রচিত হয়েছে। তবে প্রধান দেশগুলোতে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা গেলেও চলতি অর্থবছরের আগের মাসগুলোর তুলনায় প্রবৃদ্ধি কমেছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে আগামী মাসে প্রবৃদ্ধি আরও হ্রাস পেতে পারে।

তিনি বলেন, ২০২২ সালের জানুয়ারি-অক্টোবর সময়ে ইইউ বাংলাদেশ থেকে ১৯ দশমিক ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে। যা ২০২১ সালের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ৪১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

ইএআর/এমকেআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।