আম রপ্তানি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন, এবার লক্ষ্য ৪ হাজার টন

চলতি বছর আম রপ্তানি কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ৪ হাজার টন, যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সকালে ঢাকার শ্যামপুরে কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউজে আম রপ্তানির উদ্বোধন করেন কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার। এসময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, সরেজমিন উইংয়ের পরিচালক তাজুল ইসলাম পাটোয়ারী, আম রপ্তানি প্রকল্পের পরিচালক আরিফুর রহমান, বাংলাদেশ ফ্রুটস, ভেজিটেবলস অ্যান্ড এলাইড প্রোডাক্ট এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্প এবং বাংলাদেশ ফ্রুটস, ভেজিটেবলস অ্যান্ড এলাইড প্রোডাক্ট এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। আজ ৪টি দেশে প্রায় ১০ টন আম রপ্তানি হচ্ছে।
এদিকে ২০১১-১২ অর্থবছরে ২ লাখ হেক্টর জমিতে ২৩.৫০ লাখ মে. টন আম উৎপাদিত হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের ২৮টি দেশে ১৭৫৭ মে. টন আম রপ্তানি করা হয়েছিল বলে জানায় কৃষি মন্ত্রণালয়।
অনুষ্ঠানে কৃষি সচিব বলেন, সারাবিশ্বেই বাংলাদেশের আমের সুনাম রয়েছে। দেশে ২৪ লাখ টনের ওপরে আম উৎপাদন হয়। গত বছর মাত্র ১ হাজার ৭৫৭ টন রপ্তানি করা হয়েছে। বিশ্বে আম উৎপাদনে আমরা সপ্তম স্থানে থাকলেও রপ্তানি খুবই কম। রপ্তানি আরও বৃদ্ধি করতে হবে। এজন্য যত ধরনের প্রতিবন্ধকতা আছে তা দূর করা হবে। প্রয়োজনে উৎপাদন স্থানের কাছাকাছি প্যাকিং হাউজ করা হবে।
রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) ২০২২ থেকে ২০২৭ সাল মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ৪৭ কোটি টাকা। রপ্তানিযোগ্য মানসম্মত আম উৎপাদনের লক্ষ্যে দেশের ১৫ টি জেলার ৪৬ টি উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রকল্প সহায়তায় উত্তম কৃষি চর্চার মাধ্যমে আম উৎপাদন প্রদর্শনী-৩৫০টি, রপ্তানিযোগ্য জাতের আম বাগান সৃজন-৬০৪টি, বিদ্যমান আম বাগানে সার ও বালাই ব্যবস্থাপনা-২৪০ টি এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার (প্রুনিং ব্যাগিং ও বালাই ব্যবস্থাপনা) মানসম্মত আম উৎপাদন প্রদর্শনী ২০০ টি স্থাপন করা হয়েছে।
মানসম্মত আম উৎপাদনের লক্ষ্যে প্রদর্শনীসমূহ ক্লাস্টার আকারে স্থাপিত করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ৯টি উপজেলায় ৩৭১ জন আম চাষীকে ক্লাস্টার প্রদর্শনীর আওতায় আনা হয়েছে। মানসম্মত আম উৎপাদন ও পোস্ট-হার্ভেন্ট ক্ষতি কমানোর লক্ষ্যে কৃষক গ্রুপে ম্যাংগো প্লাকার, হাইড্রোলিক ম্যাংগো হারভেস্টার, গার্ডেন টিলার, ফুট পাম্প, এলএলপি ও ফিতাপাইপ সেট সরবরাহ করা হয়েছে।
বাংলাদেশে উত্তম কৃষি চর্চা (গ্যাপ) সনদ প্রদানে প্রয়োজনীয় সক্ষমতা বিদ্যমান না থাকায় ইউরোপ ও আমেরিকার মূলধারার সুপারমার্কেটসমূহে আম রপ্তানি করা সম্ভব হয় না। আমের গ্যাপ সার্টিফিকেট প্রদানের প্রয়োজনীয় জনবল ও সক্ষমতা অর্জন করা গেলে বাংলাদেশ থেকে উন্নত দেশসমূহে আম রপ্তানির পরিমান বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে।
বাংলাদেশ থেকে আম রপ্তানি তরান্বিত করার লক্ষ্যে রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের মাধ্যমে আমের পেস্টরিস্ক এ্যানালাইসিস (পিআরএ) ও উত্তম কৃষি চর্চা তৈরি এবং জিআইএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রদর্শনী এবং কৃষি প্রযুক্তির তথ্য আদান-প্রদান ও সংরক্ষণের কার্যক্রম চলমান আছে। রপ্তানিযোগ্য ৫টি আমের জাতের প্রোডাক্ট প্রোফাইল তৈরি করা হচ্ছে।
এনএইচ/এমআইএইচএস/জেআইএম