ট্রমা কাটাতে মাইলস্টোনের শিক্ষার্থীদের যে কোনো শাখায় বদলির সুযোগ
ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ট্রমায় ভোগা শিক্ষার্থীরা চাইলেই অন্য যে কোনো শাখায় বদলি হতে পারবে। কেউ যদি অন্য কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলে যেতে চায়, সেই সুযোগও দেবে কর্তৃপক্ষ। সেক্ষেত্রে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও উপদেষ্টা কর্নেল (অব.) নুরন্ নবী এ তথ্য জানিয়েছেন। রোববার (৩ আগস্ট) দুপুরে দিয়াবাড়ি ক্যাম্পাসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা জানান।
কর্নেল (অব.) নুরন্ নবী বলেন, যদি কোনো শিক্ষার্থী এখান থেকে অন্য কোনো ক্যাম্পাস বা শাখায় যেতে চায়, সেটার সুযোগ আছে। আমরা অভিভাবকদের বলেছি, তাদের যেখানে খুশি সেখানে নিয়ে যান। তবে এমন জায়গায় নিয়ে যান, যেখানে তার বন্ধু-বান্ধব আছে, যেন সে মানসিক স্বস্তি খুঁজে পায়।

তিনি আরও বলেন, নতুন কোনো জায়গায় গেলে অনেক সময় শিক্ষার্থীরা মানিয়ে নিতে পারে না। বরং পরিচিত পরিবেশ, বন্ধু মহল বা সার্কেল থাকলে তারা দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে পারে। এ কারণেই অন্য শাখায় স্থানান্তরের ক্ষেত্রে পূর্বপরিচিতির বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে।
- আরও পড়ুন
১২ দিন পর খুললো মাইলস্টোন, নেই শিক্ষার্থীদের হৈ-হুল্লোড়
মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: আরও এক শিক্ষার্থীকে ছাড়পত্র
‘বিমানের শব্দ শুনলেই মনে হয় আবার মাটিতে পড়বে’
দুর্ঘটনায় আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসায় সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করে নুরন্ নবী বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় খুব সহযোগিতা করছে। এরই মধ্যে ভারত, চীন ও সিঙ্গাপুর থেকে দক্ষ চিকিৎসক আনা হয়েছে। এ ধরনের মানসিক ট্রমা কাটিয়ে উঠতে উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন, সরকার সেটা নিশ্চিত করছে।
দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ও উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে যে বিল্ডিংগুলো অক্ষত রয়েছে, সেগুলোতে পাঠদান কার্যক্রম চলবে। তবে যেটি দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেখানে আপাতত কোনো ক্লাস বা শিক্ষা কার্যক্রম চলবে না। ওই জায়গায় এ মুহূর্তে ক্লাস পরিচালনা করার প্রশ্নই ওঠে না। সরকার তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তারাই ওই বিল্ডিং নিয়ে করণীয় ঠিক করবে।

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও উপদেষ্টা কর্নেল (অব.) নুরন্ নবী
নুরন্ নবী আরও বলেন, আমরা অভিভাবকদের অনুরোধ করেছি, যদি কোনো শিক্ষার্থী ট্রমাটাইজ হয়ে থাকে এবং এখানে ক্লাসে ফিরতে না চায়, তবে তাকে যেন বাসায় বসিয়ে না রাখা হয়। বরং তাকে এমন কোনো শাখা বা প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যান, যেখানে তার পরিচিত পরিবেশ রয়েছে। কারণ বাসায় বসে থাকলে তার মন থেকে দুর্ঘটনার বিষয়টি যাচ্ছেও না, বরং মানসিক চাপ আরও বাড়ছে।
মাইলস্টোনের দিয়াবাড়ি ক্যাম্পাস ও ভবন নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি সরকারের অনুমোদিত ক্যাম্পাস। রাজউক, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষসহ প্রয়োজনীয় সব সংস্থার অনুমতি নিয়েই আমরা এখানে প্রতিষ্ঠান করেছি। সব নিয়মকানুন মেনেই অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। তাই এর বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই।
গত ২১ জুলাই যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে ১২ দিন প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ছিল। রোববার (৩ আগস্ট) মাইলস্টোনের দিয়াবাড়ি ক্যাম্পাস খুলে দেওয়া হয়েছে। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা এদিন ক্যাম্পাসে আসেন। তবে এদিন কোনো ক্লাস হয়নি। দোয়া মাহফিল ও স্মরণসভা এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকরা কুশল বিনিময় করেন।
কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী বুধবার (৬ আগস্ট) থেকে রুটিন অনুযায়ী ক্লাস শুরু করতে চান তারা। তবে ক্লাসে আসতে শিক্ষার্থীদের জোরাজুরি বা বাধ্য করা হবে না।
এএএইচ/ইএ/জেআইএম