সকালেই স্কুল, রাত ৯টা বাজতেই ঘুমের তাড়া!

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৯:৪১ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১
প্রতীকী ছবি

তোমার ব্যাগ, বই-খাতা-কলম, স্কুলড্রেস ও জুতা সব গুছিয়ে রেখেছি। ডিনার শেষ করে রাত ১০টার আগে বিছানায় ঘুমাতে যাবে। আজ থেকে টেলিভিশন ও কম্পিউটারে গেম খেলা চলবে না।

রাজধানীর লালবাগের বাসিন্দা গৃহবধূ তাসলিমা বেগম শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টায় ভিকারুন্নেসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ আজিমপুর শাখার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী তার মেয়ে তাসনোভার উদ্দেশ্যে কথাগুলো বলছিলেন।

অন্য কোনো দিন মা এভাবে বললে, তাসনোভা হয়তো আপত্তি করতো। কিন্তু আজ মায়ের কথায় সায় দিয়ে তাড়াতাড়ি ডিনার সেরে ঘুমাতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে সে। রাত পোহালেই যে তাকে স্কুলে যেতে হবে। সারাদেশে তার মতো সব শিক্ষার্থীই কাল স্কুলে যাবে। কারণ, করোনা মহামারি পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে শিথিল হওয়ায় প্রায় দেড় বছর পর রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) থেকে খুলছে স্কুল-কলেজ-মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই রাতে তাসনোভার এমন প্রস্তুতি কাল খুলতে যাওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সব শিক্ষার্থীরই যেন প্রতিচ্ছবি।

এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে এ খুদে শিক্ষার্থীর মা তাসলিমা বেগম বলেন, এতদিন স্কুল কবে খুলবে, এ নিয়ে টেনশনে ছিলাম। কিন্তু স্কুল খোলার ঘোষণার পর থেকে নতুন করে নানা দুশ্চিন্তা ভর করছে। আগামীকাল থেকে আবার নতুন যুদ্ধ শুরু হচ্ছে। সকালে উঠে মেয়েকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া, আবার স্কুল থেকে নিয়ে আসা, স্কুলে গিয়ে আবার অসুস্থ হয় কি না ইত্যাদি নানা দুশ্চিন্তা ভর করছে। তবে এতদিন পর স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে মেয়েটা খুব খুশি। এখন ভালোভাবে ক্লাস ও পরীক্ষা হলেই হয়।

শুধু তাসলিমা বেগম নন, আগামীকাল রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হচ্ছে।

মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণজনিত ঝুঁকির কারণে গত বছরের (২০২০) মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। এক সময় শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে অনলাইনে ক্লাস চললেও লম্বা সময় লাখ লাখ শিক্ষার্থী ছিল ঘরবন্দি। এতদিন তারা কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করছিল, যেন খুলে দেয়া হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ কমে আসায় করোনা নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে গঠিত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সুপারিশে প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান পরিচালনা হবে বলে সরকারের নির্দেশনায় বলা হয়েছে।

স্কুল খোলার ঠিক আগের দিন সন্ধ্যায় বিজিবি পরিচালিত রাজধানীর বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সোহানুর রহমান সোহান জাগো নিউজকে বলে, স্যারেরা জানিয়েছেন, আমাদের স্কুলে জোড় ও বিজোড় ক্রমিক নম্বর অনুসারে ক্লাস নেয়া হবে।

এ শিক্ষার্থী বলে, এতদিন পরে স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হবে, এ কথা ভেবে খুব ভালো লাগছে। অন্যদিন ঘুমাতে ১২টা বেজে গেলেও আজ ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে ঘুমাতে যাবো।

এমইউ/এমকেআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।