প্রশ্নফাঁস: মাউশির দুই কর্মচারীকে বরখাস্ত নয়, শোকজ

প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় গ্রেফতার দুই কর্মচারী আহসান হাবীব ও নওশাদুল ইসলামকে শোকজ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। সোমবার (২৩ মে) মাউশি থেকে তাদের এ শোকজ করা হয়। তবে প্রশ্নফাঁস করলেও তাদের বিরুদ্ধে ‘কর্মস্থলে অননুমোদিত’ অনুপস্থিতির অভিযোগ আনা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।
অন্যদিকে পুলিশের কাছে গ্রেফতারকৃতদের দেওয়া তথ্যে এই প্রশ্নফাঁসের নাটের গুরু হিসেবে শিক্ষা কর্মকর্তা (৩১তম বিসিএস) চন্দ্রশেখর হালদার মিল্টনের নাম উঠে এসেছে। দুই কর্মচারীকে শোকজ করা হলেও মিল্টনের ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অবহিত পর্যন্ত করা হয়নি। তিনিও গত ১৬ মে থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত আছেন বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাউশির পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, ‘দুই কর্মচারীকে শোকজ করা হয়েছে। তিনদিনের মধ্যে জবাব না পেলে পরবর্তী পদক্ষেপে যাবে কর্তৃপক্ষ। আর ক্যাডার কর্মকর্তা হিসেবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারে না মাউশি। পুলিশি প্রতিবেদন পাওয়া গেলে তার ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গত ১৩ মে মাউশির অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানীর ইডেন কলেজ কেন্দ্রে সুমন জোয়াদ্দার নামে এক পরীক্ষার্থীকে নকলসহ ধরা হয়। পরে দেখা যায়, তিনি যে ৭০টি প্রশ্নের উত্তর লিখে এনেছেন সেগুলোই পরীক্ষায় এসেছে। এরপর তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তিনি চক্রের নাম বলে দেন। এরপর মাউশি কর্মকর্তা আহসান হাবীব, নওশাদুল ইসলাম, পটুয়াখালী সরকারি কলেজের প্রভাষক রাশেদুল ইসলাম (৩৪তম বিসিএস) ও খেপুপাড়ার একটি স্কুল শিক্ষক সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।
সাইফুল পুলিশকে জানিয়েছেন, তাকে প্রশ্নপত্র দিয়েছেন শিক্ষা কর্মকর্তা চন্দ্রশেখর হালদার মিল্টন।
জানা গেছে, এর আগেও প্রশ্নফাঁস করেছে এই চক্র। এ কারণে মাউশিতে এর আগে নেওয়া আরও চারটি নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ ওই পরীক্ষাগুলোতেও প্রশ্নবাহকের দায়িত্ব পালন করেছেন মিল্টন।
পুলিশ জানায়, শুধু প্রশ্নফাঁস নয়, এমপিওভুক্তি, বদলিসহ নানা ধরনের অবৈধ কাজের সঙ্গে একাধিক শিক্ষা কর্মকর্তা যুক্ত বলে তারা জানতে পেরেছে। গা ঢাকা দেওয়ায় তারা মিল্টনকে গ্রেফতার করতে পারেনি। তবে তার সম্পদের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
মাউশি সূত্র জানায়, দুই কর্মচারীর শোকজের মেয়াদ আগামী বুধবার শেষ হচ্ছে। যেহেতু অননুমোদিত ছুটির অভিযোগ আনা হয়েছে, তাই এখন নিয়ম অনুযায়ী আরও দুটি শোকজ করতে হবে। এরপর সাময়িক বরখাস্তের দিকে যেতে হবে। কিন্তু প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ আনা হলে সরাসরি বরখাস্ত করতে পারতো কর্তৃপক্ষ। এই পদক্ষেপটি ওই দুই কর্মচারী বা মিল্টনকে বাঁচিয়ে দেওয়ার কোনো পদক্ষেপ কি না তা নিয়েই সংশয় ও রহস্য তৈরি হয়েছে।
এমএইচএম/ইএ/এএসএম