নতুনের সঙ্গে পুরোনো বই, আক্ষেপ শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:২৭ পিএম, ০১ জানুয়ারি ২০২৩

সারাদেশে চলছে বই বিতরণ উৎসব-২০২৩। তবে পাঠ্য বই সংকটের কারণে প্রাথমিক পর্যায়ের কোনো কোনো শিক্ষার্থী একটি বই পেলেও অনেকে খালি হাতে কিংবা অন্য শ্রেণির বই নিয়ে উৎসবে উপস্থিত হয়েছে।

যাদের হাতে বই দেওয়া হয়েছে তাদের অনেকের হাতে আবার অন্য শ্রেণির বই দেখা গেছে। চতুর্থ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েও পেয়েছেন তৃতীয় শ্রেণির বই। বছরের প্রথম দিনে নতুন বই না পাওয়ায় আক্ষেপও প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী অভিভাবক ও শিক্ষকরাও।

রোববার (১ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর আয়োজিত ‘বই বিতরণ উৎসব-২০২৩’ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

রাজধানীর দক্ষিণ মুহসেন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাজিয়া ইসালম শায়নার সঙ্গে কথা হয়। এই শিক্ষার্থী এবার চতুর্থ শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হলেও তাকে দ্বিতীয় শ্রেণির একটি বই হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এ বছর আমরা একটিও বই পায়নি। শিক্ষকরা বলেছেন নতুন বই আসেনি। তবে আমাদের ক্লাসের সহপাঠীরা উৎসবে এসেছে।

Book3.jpg

একই স্কুলের আরেক শিক্ষার্থী উম্মে কুলসুম আভা বলেন, নতুন বছরের বই পায়নি। কেন পায়নি তাও জানি না। শিক্ষকরা আমাদের এখানে নিয়ে এসেছেন তাই এসেছি।

আফসানা আক্তার মরিয়ম নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, এ বছর আমি পঞ্চম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছি তবে নতুন বছরের বই না আসায় বই পায়নি। উৎসবে আসতে আমাকে স্কুল থেকে চতুর্থ শ্রেণির বই দেওয়া হয়েছে।

দক্ষিণ মুহসেন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিলকিস আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, স্কুলে সব বই এখনো পড়া হয়নি। দ্বিতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির সবকয়টি বই পাঠানো হয়েছে। প্রাক-প্রাথমিক, তৃতীয় পঞ্চম শ্রেণির বই পাওয়া যায়নি। সে কারণে এসব স্থানের শিক্ষার্থীদের হাতে বই দেওয়া সম্ভব হয়নি।

তিনি বলেন, যেহেতু বই সবে শিক্ষার্থীদের আনতে হয়েছে সে কারণে অন্য ক্লাসের একটি বই তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

Book3.jpg

জানা গেছে, প্রাথমিকের কেন্দ্রীয় পরিষদে রাজধানীর ৩৪টি স্কুলের প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থীকে উপস্থিত করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে শিক্ষক ও অভিভাবকরাও উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষকরা জানান, ঢাকা মহানগরের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে সব শ্রেণির বই পাঠানো হয়নি। সে কারণে কোনো কোনো শিক্ষার্থীকে বই ছাড়াই উৎসবে আনতে হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে নির্দেশনায় শিক্ষকরা তাদের নিজ নিজ স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন। এ বছর স্কুলের যেসব বই পাঠানো হয়েছে অধিকাংশ নিউজ প্রিন্টের নিম্নমানের কাগজে তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন শিক্ষকরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, এবার কাগজ সংকটের কারণে শতভাগ বই স্কুলগুলোতে দেওয়া সম্ভব হয়নি। আমাদের কাছে তথ্যমতে ৮০ শতাংশ বই সারাদেশে পাঠানো হয়েছে। জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে বাকি বইগুলো পাঠানো হবে।

নিম্নমানের বইয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের নজরে এখনো এ ধরনের বিষয় আসেনি। এমন কাজ কেউ করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এমএইচএম/এমআরএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।