দেশে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ বুক অলিম্পিয়াড

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:৪২ পিএম, ১৯ জুলাই ২০২৫

‘বই পড়ি, স্বপ্ন আঁকি’—স্লোগানে স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রথমবারে মতো অনুষ্ঠিত হয় ‘বাংলাদেশ বুক অলিম্পিয়াড’। ১৯ জুলাই সকাল সাড়ে ৯টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আলোক শিক্ষালয়ে মুক্ত আসরের উদ্যোগে বাংলাদেশ বুক অলিম্পিয়াড কমিটি এ আয়োজন করে। শিশু-কিশোরদের বইপড়ার অভ্যাস তৈরি করতে এ অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হয়। আলোক শিক্ষালয়ে ২০০ শিক্ষার্থী অংশ নেয়।

জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অলিম্পিয়াডের যাত্রা শুরু হয়। লাল ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন শব্দঘর সম্পাদক ও কথাসাহিত্যিক মোহিত কামাল। তিনি বলেন, ‘প্রথমবারের এমন আয়োজনে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। বইয়ের সঙ্গে থাকতে চাই। পড়াশোনায় বিমুখ হচ্ছে সন্তানেরা, আচরণেও ব্যাপক বিধ্বংসী অবস্থা তৈরি হচ্ছে, ঘরে ঘরে চলছে প্রকাশ্য যুদ্ধ। মা-বাবা হয়ে যাচ্ছেন সন্তানের বিরুদ্ধপক্ষ। ক্যারিয়ার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নেটের বিকল্প বিনোদনের উপাদান থাকতে হবে তার ঘরে—লাইবেরি গড়ে তুলতে হবে।’

মোহিত কামাল বলেন, ‘শিশুতোষ বই কিংবা বয়স অনুযায়ী শিশুদের ঘরে পারিবারিক সামর্থের আলোকে লাইব্রেরি সাজাতে হবে। মজার মজার বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে, পড়ার মাধ্যমে বিনোদন দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারলে, অনিয়ন্ত্রিত হওয়ার সুযোগ পাবে না সন্তান। বড়দেরও নিয়ন্ত্রিত হতে হবে নেট আসক্তি থেকে। তাদেরই রোলমডেল প্লে করতে হবে, পরিবারের বড়দেরও।’

দেশে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ বুক অলিম্পিয়াড

শিশুসাহিত্যিক আখতার হুসেন বলেন, ‘আমার এখন ৮১ বছর বয়স। তবু আমি এখানে এসেছি। কারণ বুক অলিম্পিয়াড বিষয়টা আমার কাছে দারুণ লেগেছে। প্রথমবারের মতো এমন আয়োজনের সাক্ষী হিসেবে থাকতে পেরে আবেগাপ্লুত। নিশ্চয়ই একদিন গণিত অলিম্পিয়াডের মতো এর ব্যাপক বিস্তার পাবে।’

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ বুক অলিম্পিয়াড কমিটির সভাপতি রোকেয়া ইসলাম বলেন, ‘আমরা চাই বইপড়ার মাধ্যমে ছেলেমেয়ের চিন্তার বিকাশ হোক। আমরা বুক অলিম্পিয়াডকে অনেক দূর নিয়ে যেতে চাই। ছেলেমেয়ের বইপড়ার মাধ্যমে তাদের স্বপ্নকে বড় করবে।’

অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ বলেন, ‘আমরা চাই বইপড়ার মাধ্যমে ছেলেমেয়েদের সৃজনশীল ও মননশীল চিন্তার সৃষ্টি হোক। প্রতি বছর কমপক্ষে ২০-২৫টি বইপড়ার অভ্যাস গড়ে উঠুক।’

দেশে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ বুক অলিম্পিয়াড

এ ছাড়া বক্তব্য দেন শিশুসাহিত্যিক দন্ত্যস রওশন, লেখক ও গবেষক সাহাদাত পারভেজ, যোগাযোগ বিষয়ক প্রধান সমন্বয়ক আবুল বাসার মিরাজ, আলোক শিক্ষালয়ের শিক্ষক শাওলিন আক্তার, মুক্ত আসরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৌশিক চাকমা প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বইবিষয়ক নানা ধরনের প্রশ্ন নিয়ে তিনটি ক্যাটাগরিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা শেষে শুরু হয় সাংস্কৃতিক ও আলোচনা সভা। নজরুল সংগীত পরিবেশন করেন আমিই নজরুলের পরিচালক উম্মে রুমা ট্রফি ও সহপরিচালক সংগীতা পাল। গান পরিবেশন করেন আলোক শিক্ষালয়ের শিক্ষার্থীরা। সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ বুক অলিম্পিয়াডের প্রধান সমন্বয়ক আয়শা জাহান নূপুর।

তিনটি ক্যাটাগরিতে ৩২ জনকে বিজয়ী করা হয়। প্রত্যেক বিজয়ীকে দেওয়া হয়ে বই ও সনদ। প্রস্তুতিপর্বের বিজয়ীরা সরাসরি জাতীয় পর্যায় অংশ নেবেন। অলিম্পিয়াডে সহযোগিতা করেছে স্বপ্ন’৭১ প্রকাশন, বইচারিতা ও কাঠবিড়ালি প্রকাশন।

এসইউ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।