একটা রিলেশনশিপে অনেকদিন ছিলাম

বিনোদন প্রতিবেদক
বিনোদন প্রতিবেদক বিনোদন প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৫৬ এএম, ২০ জুন ২০২৫

ছোটপর্দার অভিনেত্রী রিমু রোজা খন্দকার। সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন। প্রয়াত অভিনেত্রী টিনা খানের মেয়ে তিনি। মুন্সিগঞ্জে জাগো এন্টারটেইনমেন্ট প্রযোজিত ধারাবাহিক ‌‘প্রেমপুকুর’ নাটকের শুটিংয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা হয় তার। আজ (২০ জুন) শুক্রবার তার জন্মদিনে প্রকাশ করা হলো সেই কথপোকথন।

জাগো নিউজ: ফেসবুকে একবার স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন কোনো পরিবারের সঙ্গে থাকতে চান! পেয়েছিলেন থাকার মতো পরিবার?

রিমু: অনেক মানুষ রিপ্লাই দিয়েছিল, ইনবক্সে যারা নক করেছিল, বেশিরভাগই ফেক। আমি আসলে চেয়েছিলাম হাজবেন্ড-ওয়াইফ থাকে বা আমার মতো যারা সিঙ্গেল ওয়ার্কিং ওম্যান এ রকম কোনা বাসা। পাইনি। বড় একটা বাসা নিলে একা একা ভাড়া অ্যাফোর্ড করা সম্ভব না। আমার একা একা রান্না করে খেতে একদম ইচ্ছা করে না। আমি একা একা খেতেও পারি না।

একটা রিলেশনশিপে অনেকদিন ছিলাম

জাগো নিউজ: একা থাকছেন কেন?

রিমু: আমার নিজের ফ্যামিলি নাই। আমি একদমই একা একটা মানুষ। মা ছোটবেলায় মারা গেছেন, বাবাও মারা গেছেন। দেখেন এই যুগে এসে এখনো ঢাকা শহরের মানুষ একা একটা মেয়েকে বাসাভাড়া দিতে চায় না। এটা একটা প্রবলেম। আরও যদি শোনে মিডিয়ায় কাজ করি, সে তো খুবই খারাপ একটা কাজ। এদের তো বাসাভাড়া দেওয়াই যাবে না। কারণ এরা ভালো কাজ করে না, এদের পয়সাটা হারামের পয়সা!

জাগো নিউজ: আপনি তো মাঝে মাঝে ফেসবুকে স্ট্যাটাসে দেন যে পরিবারকে খুব মিস করেন। তাইলে পরিবার কেন হলো না?

রিমু: পরিবার আসলে করতে চেয়েছিলাম। একটা রিলেশনশিপে অনেকদিন ছিলাম। নিজেরা বিয়েও করেছিলাম। কিন্তু তাদের ফ্যামিলি থেকে অ্যাকসেপ্ট করেনি। তখনও কিন্তু মিডিয়াতে আসিনি। আমার মা অভিনেত্রী ছিলেন, এটা একটা বড় কারণ ছিল। নায়িকার মেয়ে বিয়ে করলে তাদের ফ্যামিলি স্ট্যাটাসের সাথে যাবে না। পরে একটা টাইমে যখন মিডিয়ায় আসছি, সে আবার আমার কাছে ব্যাক করতে চেয়েছে। কিন্তু আর হয় নাই আসলে। হয়তো আমার কপালেই ছিল না।

একটা রিলেশনশিপে অনেকদিন ছিলাম

জাগো নিউজ: আপনার শৈশব-কৈশোরের সময়টা নিশ্চয়ই বেশ ভালো ছিল?

রিমু: আমি ভারতেশ্বরী হোমসে পড়েছি, অনেক নামকরা একটা স্কুল। প্রত্যেকটা কাজ আমাদের শেখানো হতো। আমার বাসায় কিন্তু কোনো হেল্পিং হ্যান্ড নাই। বাসায় কাপড় ধোয়া থেকে আরম্ভ করে ওয়াশরুম, এভরিথিং আমি নিজে করি। যদি আমার মা বেঁচে থাকতো, আজ হয়তো আমি বাংলাদেশে থাকতাম না বা মিডিয়াতে আসতাম না। হয়তো আমিও অন্য স্টার-কিডদের মতো অস্ট্রেলিয়া, কানাডা বা আমেরিকায় থাকতাম, লেখাপড়া করতাম।

জাগো নিউজ: মিডিয়ায় কীভাবে এলেন?

রিমু: মিডিয়ায় আসার আসলে আমার কোনো ইচ্ছা ছিল না। একদমই না। কারণ আমি তো জগৎটা দেখিওনি। আমার যতটুকু মনে পড়ে, আমার আম্মু সকাল বেলা যেতো, রাতের বেলা আসতো। ওইটুকুই মনে পড়ে। স্কুলে নাচ-গান করতাম। আমার টিচাররা বলতেন, তোমার মা এত বড় অভিনেত্রী ছিল, তুমিও  নাচ-গান শেখো। যদি অভিনেত্রী হতে চাও, এগুলো প্লাস পয়েন্ট হিসেবে কাজ করবে। পড়াশোনা শেষে এয়ার হোস্টেজের ট্রেনিং করি। জিএমজি এয়ার লাইন্সে কিছুদিন ট্রেনিং করলাম, সিলেক্ট হলাম। কিছুদিন পর জবটা শুরু হবে। এরই মধ্যে জিএমজি এয়ার লাইন্স বন্ধ হয়ে গেল। খুবই মন খারাপ হয়েছিল। ট্রেনিংয়ে একটা ফটোশুট করা হয়।

একটা রিলেশনশিপে অনেকদিন ছিলাম

সেই ছবি আনতে গিয়ে শাড়ির ফটোশুটের অফার পেয়েছিলাম। তারপর শুরু। পরিচয় হলো ফেরদৌস হাসান রানার সাথে। তিনি তখন চ্যানেলের সুপার স্টারদের, লাক্সের মেয়েদের নিয়ে একটা ২৬ পর্বের সিরিয়াল বানাবেন। সেটাতে অভিনয় করি। সেই থেকে শুরু, এখনও কাজ করে যাচ্ছি।

জাগো নিউজ: ছোটবেলায় এফডিসিতে বেড়াতে যাননি কখনও?

রিমু: এজন্যই তো এফডিসিকে নানির বাড়ি বলি। আমাকে পেটে নিয়ে অনেক সিনেমার শুটিং করেছেন মা।

একটা রিলেশনশিপে অনেকদিন ছিলাম

জাগো নিউজ: এখন কী করছেন?

রিমু: ‘প্রেমপুকুর’ নামে একটা নাটকের কাজ করছি। প্রেমপুকুরে একটা ফ্যামিলি আছে, ফ্যামিলিতে মা আছেন আর আমরা তিন বোন। আমার হাজবেন্ড একজন গুন্ডা, জোর করে তুলে নিয়ে আমাকে বিয়ে করছিল। হাজবেন্ডের সাথে আমি হ্যাপি না। যখন আমি শুনেছি যে প্রেমপুকুরে ডুব দিলে মানুষের আশা পূরণ হয়, তখন বাপের বাড়িতে চলে গেছি, প্রেমপুকুরে ডুব দিতে, যদি ভালো কাউকে পাই। খুবই মজার একটা ক্যারেক্টার।

জাগো নিউজ: আপনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা। ভালো থাকবেন।
রিমু: ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

এমআই/আরএমডি/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।