ছোটবেলা থেকেই রোজা রাখি ও নামাজ পড়ি : রিনা খান

রিনা খানের আসল নাম সেলিমা সুলতানা। চলচ্চিত্রে খলচরিত্রে অভিনয়ের জন্য পরিচিত তিনি। পর্দায় তার উপস্থিতি মানেই দর্শকের জন্য টেনশান। এই বুঝি কোনো কূটচাল দিয়ে সর্বনাশ করলেন।কারো।
তবে ব্যক্তিজীবনে রিনা খান অন্য মানুষ। সাদামাটা এক জীবন তার আর দশটা নারীর মতোই। শান্ত, নিভৃতচারী কিন্তু মিশুক। একজন আদর্শ মা, সুগৃহীণী।
১৯৮২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত 'সোহাগ মিলন' চলচ্চিত্রের মাধ্যমে চলচ্চিত্রাঙ্গনে অভিষেক। এরপর চার দশকের ক্যারিয়ারে প্রায় ছয়শ'রও অধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন এই অভিনেত্রী। খলচরিত্রে সাফল্য পেলেও পজেটিভ চরিত্রেও দেখা গেছে তাকে সাবলীল অভিনয়ে।
এখন সিনেমা কম তাই তাকেও কম দেখা যায়। বর্তমনে তিনি বাসায় আছেন। মানছেন করোনা মোকাবিলার লকডাউন। কেমন কাটছে তার দিনকাল, জাগো নিউজের পাঠকদের জন্য তাই জানাচ্ছেন অরণ্য শোয়েব
জাগো নিউজ : গৃহবন্ধি জীবন কাটছে কেমন ?
রিনা খান : আমি তো সেই মার্চ মাস থেকেই ঘরেই রয়েছি। বের হচ্ছি না। কোথাও যাচ্ছি না। দু একবার যা বের হয়েছি তাও টুকিটাকি কেনাকাটার জন্য।বের হয়েছি নিজেকে খুব প্রটেক্ট করে এবং দুরত্ব বজায় রেখেই।
এমনিতেও শুটিং না থাকলে বাসায়ই থাকি। আমি একজন মা। আমার সন্তান-পরিবার রয়েছে। তাদের দিকে খেয়াল রাখতে হয়। আমার দুই ছেলেই এখন জার্মানিতে। তবু তাদের অনেক দায়িত্বই এখনো পালন করতে হয়।
জাগো নিউজ : করোনা সবাইকে বেশ লম্বা সময়ের অবসর দিয়েছে। এই অবসরে আপনি কি করছেন ?
রিনা খান : আমার অবসর কখনোই ছিলো না। কাজ থাকলেও যা না থাকলেও তা।ঘরে থাকলেও ব্যস্ততা থাকে।এসবের ফাঁকে মাঝে মাঝে টিভি দেখি। ইউটিউবে রান্নার রেসিপি শিখি।
জাগো নিউজ : রমজান মাস চলছে। বিশেষ কাজটি কি করছেন?
রিনা খান : রমজান মাস আমাদের জন্য একটি বিশেষ মাস। সবাই তো রোজা এবং তারাবি পড়েন। আমিও এই সময়টাতে বেশি করে ইবাদত করার চেষ্টা করি। অনেক ছোটবেলা থেকেই রোজা রাখি ও নামাজ পড়ি। এই রমজানে একটি বিশেষ দায়িত্ব দান, যাকাত। আমাকেই সামলাতে হয়। রোজায় শুটিং না করার চেষ্টা করি।
জাগো নিউজ : এবারে ঘরবন্দী এক নতুন অভিজ্ঞতার ঈদ আসতে চলেছে। এই ঈদে কি করবেন বলে ভাবছেন?
রিনা খান : ঈদ বলে এবার কিছু নেই। আনন্দ নেই কারও মনে। কেনাকাটা হবে।না। আত্মীয়স্বজনদের বাসায় যাওয়া হবে না। আমার বাসাতেও তো কেউ আসবে না।লকডাউনের মধ্যে ঘরের ভেতরে ঈদ হবে। বাসায় যারা আছি তাদের নিয়ে সময় যাবে আর কী।
আর এই সময় কারোর বাসায় যাওয়াটা ঠিকও না। এখন জীবন বাঁচানো ফরজ আদায় করতে হচ্ছে। দোয়া করি রোজা রেখে দ্রুত সব ঠিক হয়ে যাক।
জাগো নিউজ : ছোটবেলার ঈদের সাথে বড়বেলার ঈদের কি পার্থক্য পান?
রিনা খান : ছোটবেলার ঈদ তো মজার ছিল। কোনো দায়-দায়িত্ব ছিলো না। ঘুরেছি ফিরেছি। ঘুম থেকে উঠতাম। নতুন ড্রেস পরে বের হয়ে যেতাম বাসা থেকে।আত্মীয়স্বজন ও বান্ধবীদের বাসায় যেতাম। অনেক মজা করতাম।
আর এখন বাসা থেকে বের হওয়া যায় না। শুধু সিনেমা নাটকের শুটিং থাকলে বের হওয়া হয়। আর মাঝে মাঝে আত্মীদের বাসায় যাওয়া হয়।এখন ঈদ বাসায় থাকতে হয়। রান্না করতে হয়। কে আসবে বাসায় তাদের খাতির যত্ন মেহমানদারী করতে হয়।ছোটবেলার ঈদ তো এ পাবো না। সেই দিনগুলো মজার ছিল। মিস করি খুব।
জাগো নিউজ : করোনার এই দিনগুলোতে আপনার যা উপলব্ধি সবার উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন?
রিনা খান : আমরা এখন সবাই বিপদের মধ্যে আছি। আমাদের ভয়াবহ অবস্থা কেবল মনে হয় শুরু হলো। তাই ঈদকে ঈদ মনে না করে দেশের কথা চিন্তা করে ঘরে থাকতে হবে। নিরাপদ থাকতে হবে।
এবারের ঈদ আনন্দের নয়, নিরাপদ থাকার উৎসব হিসেবে দেখতে হবে। সবাই যেন সাবধানে থাকেন সেই অনুরোধ করবো। সবাই সচেতন থাকুন। দেশ বাঁচান নিজে বাঁচুন ও পরিবারকে বাঁচান।
জাগো নিউজ স্পেশাল। শেষ দুটো প্রশ্নের উত্তর চাই
১/ প্রিয় নায়ক নায়িকা কে ??
২/ নিজের জীবনে করা সবচেয়ে বড় ভুল কোনটি ছিল?
রিনা খান : ১ নম্বর প্রশ্নের উত্তর হলো আমার প্রিয় নায়ক উত্তমকুমার এবং প্রিয় নায়িকা সুচিত্রা সেন৷ খুব ভালো লাগে তাদের সিনেমা।
আর দুই নম্বর উত্তর হলো (হাসি দিয়ে) এখন মনে পড়ছে না। জীবনে আসলে অনেক ভুল থাকে মানুষের। তারমধ্যে বড় কোনটি বের করা মুশকিল। আচ্ছা যদি মনে পড়ে আমি অবশ্যই জানাবো।
এলএ/পিআর