কর্মজীবী মায়েদের পাশে দাঁড়াতে মলি গড়লেন ‘কিডি কেয়ার’

মামুনূর রহমান হৃদয়
মামুনূর রহমান হৃদয় মামুনূর রহমান হৃদয় , ফিচার লেখক
প্রকাশিত: ০৪:০৭ পিএম, ১১ মে ২০২৫

সন্তানকে ভালোভাবে বড় করতে গিয়ে চাকরি ছাড়তে হয়েছিল লুৎফুন নাহার মলিকে। কিন্তু তাতেই থেমে থাকেননি। নিজের সন্তানের যত্ন নিতে গিয়ে, অনেকটা পথ পেরিয়ে তিনি খুঁজে পান; আরও অনেক সন্তানের পাশে দাঁড়ানোর এক স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন থেকেই ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি খিলগাঁওয়ের তিলপাপাড়া ৭ নম্বর রোডে গড়ে তোলেন ডে-কেয়ার কেন্দ্র ‘কিডি কেয়ার’। কর্মজীবী বাবা-মায়ের সন্তানদের জন্য যা হয়ে উঠেছে একটি নিরাপদ ও মমতাময় ঠিকানা।

মলির ভাষায়,‘অনেক মায়েদের যেন আমার মতো স্বপ্নের চাকরি ছেড়ে দিতে না হয়, সেই ভাবনা থেকেই কিডি কেয়ার গড়ার উদ্যোগ নিই। এখানে বাচ্চারা নিরাপদ ও আনন্দঘন পরিবেশে সারাদিন থাকতে পারে, যা তাদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে সহায়ক।’

বিজ্ঞাপন

তবে শুরুটা খুব সহজ ছিল না। মলি জানান, ‘শিশুদের ডে-কেয়ারে অভ্যস্ত করাটা ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। শুরুতে একটু সময় লেগেছে, কিন্তু ধীরে ধীরে খেলা, খাওয়া, ঘুম, পড়ার পাশাপাশি নানা ধরনের মজার এক্টিভিটিস করানো হয়। এইসব কিছু করতে করতে একটা আন্তরিকতা আর ভালোবাসার জায়গা তৈরি হয়েছে।’

‘মা’ না হয়েও একজন মা হয়ে ওঠার গল্প যেন মলির। তিনি বলেন, ‘এতগুলো শিশুর মা না হলেও, ওদের সঙ্গে কাটানো প্রতিটি দিন আমাকে মায়ের মতোই করে তোলে। তাদের সঙ্গে আমার সম্পর্কটা যেন নিজের সন্তানের সঙ্গেই গড়ে ওঠা সম্পর্কের মতো।’

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

কর্মজীবী মায়েদের পাশে দাঁড়াতে মলি গড়লেন ‘কিডি কেয়ার’

মা দিবস নিয়ে মলির অনুভবও একান্ত আবেগময়। তিনি বলেন, ‘সন্তানের সঙ্গে মায়ের যে ভালোবাসার টান, সেই অনুভূতিটাই এই দিনটিকে আরও গভীর করে তোলে। মা দিবসে আমি আমার সন্তানদের চোখে আমাকে যেমন দেখি, তেমনই দেখি কিডি কেয়ারের প্রতিটি শিশুর চোখে নিজের প্রতিচ্ছবি।’

ডে-কেয়ার পরিচালনায় অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখাটা খুব জরুরি বলে মনে করেন মলি। তার ভাষায়, ‘আমাদের সঙ্গে বাচ্চাদের মায়েদের আন্তরিকতা আর বন্ধুত্বের সম্পর্ক রয়েছে। এই আস্থার জায়গাটা ছাড়া ডে-কেয়ার পরিচালনা সম্ভব নয়।’

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

প্রতিদিনই শিশুরা মলিকে উপহার দেয় নানা আবেগের মুহূর্ত। এক শিশুর মুখে ‘মা-মিস’ ডাক এখনো তাকে আবেগে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। মলি বলেন, ‘এই ডাকটাই আমার সব পরিশ্রম সার্থক করে তোলে।’

তবে সব কাজেরই কিছু চ্যালেঞ্জ থাকে। ‘কিডি কেয়ার’ এর কর্ণধার জানান, 'অনেক সময় অভিভাবকরা নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় নিয়ে ফেলেন, আবার কেউ কেউ নির্ধারিত পেমেন্ট সঠিক সময়ে করেন না। ছোট ছোট এই বিষয়গুলো অনেক সময় ডে-কেয়ার পরিচালনায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।’

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথায় আশাবাদী মলি। তিনি বলেন, ‘খিলগাঁওয়ে আমাদের এই ডে-কেয়ার সেন্টারটি আরও বড় করতে চাই। পাশাপাশি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য ‘কিডি কেয়ার চাইল্ড থেরাপি সেন্টার’ চালুর পরিকল্পনাও রয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

কেএসকে/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।