মানবতার মাধ্যমেই হোক থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন

ফিচার ডেস্ক
ফিচার ডেস্ক ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:৪২ পিএম, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫

ফারিয়া ইসলাম

প্রতিবছর থার্টি ফার্স্ট নাইটকে ঘিরে সারা বিশ্বে জাঁকজমকপূর্ণ নানা আয়োজন করা হয়। বাইরের দেশের এই ভিন্ন সংস্কৃতি একবিংশ শতাব্দীতে এসে আমাদের সংস্কৃতিতেও মিশে যাচ্ছে। ব্যয়ের নামে প্রতিবছর অপচয় হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। একই সঙ্গে পরিবেশেরও নানাবিধ ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। হঠাৎ উচ্চ শব্দ ও আতশবাজির বিকট আওয়াজে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে ঘুমন্ত মানুষ, অসুস্থ রোগী, শিশু ও প্রবীণরা। বাদ যায় না নিরীহ প্রাণীরাও। আতঙ্কে ঝরে পড়ে লাখ লাখ পাখির প্রাণ। অসহায় ও ভীত চোখে হামাগুড়ি দিয়ে আশ্রয় খোঁজে বহু প্রাণী।

আচ্ছা! যে সংস্কৃতিতে মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হয়, হাজার হাজার প্রাণীর জীবন ঝরে যায় এবং পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সে সংস্কৃতি কি কখনো কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের চিন্তাভাবনার অংশ হতে পারে? ক্ষণিকের এই আজগুবি আতশবাজি আর উচ্চ শব্দের গান-বাজনা কি সত্যিই উদযাপনের নাম হতে পারে?

থার্টি ফার্স্ট নাইট আসলে কী? এর প্রকৃত অর্থ ও সঠিক চিন্তাভাবনা কী আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি? একটি বছর চলে যাওয়া মানে আমাদের জীবনের একটি অধ্যায় পৃথিবী থেকে বিদায় নেওয়া। একটি বছর চলে যাওয়া মানে আমাদের আয়ুর একটি অংশ ফুরিয়ে যাওয়া। এই অধ্যায়গুলো কি আমাদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ নয়? এর জন্য কি আমাদের অন্তত সামান্য অনুশোচনা হওয়া উচিত নয়?

থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন করা যেতে পারে কিছু ভালো কাজের মধ্য দিয়ে। আমরা ইচ্ছে করলেই আমাদের চিন্তাধারাকে একটু ভিন্ন পথে নিতে পারি। উদযাপন করতে পারি মানবিক ও কল্যাণমূলক কাজের মাধ্যমে।

আমাদের চারপাশে অনেক মানুষ আছে, যারা ফুটপাতে কিংবা রাস্তার আনাচে-কানাচে অনাহারে দিন কাটায়। সারাদিনে পেটে জোটে না একবেলা খাবার। তীব্র শীতে তারা কাঁপতে থাকে, অথচ নেই কোনো শীতবস্ত্র। যে টাকা দিয়ে থার্টি ফার্স্ট নাইটের নামে অপচয় করা হয়, সেই টাকা দিয়ে যদি একজন অনাহারী মানুষকেও পেটভরে খাওয়ানো যায় কিংবা কোনো অসহায় মানুষকে শীতের কাপড় দেওয়া যায় তবুও মানবতা বেঁচে থাকবে।

একটি ছোট্ট ভালো কাজের মধ্য দিয়েই আমরা আত্মিক প্রশান্তি লাভ করতে পারি। ভালো কাজ করলে শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকে। তাই আসুন, থার্টি ফার্স্ট নাইটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জাঁকজমকপূর্ণ আতশবাজি আর উচ্চ শব্দের গান-নাচের ছবি শেয়ার না করে ছড়িয়ে দিই মানবতার ছবি। ছড়িয়ে দেওয়া হোক দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর গল্প।

আরও পড়ুন
দক্ষতা নিয়ে যাব বিদেশ, রেমিট্যান্স দিয়ে গড়বো স্বদেশ
বিয়েতে মেহেদি পরা আজকের নয়, ৫০০০ বছরের ঐতিহ্য

লেখক: শিক্ষার্থী, ভৈরব সরকারি মহিলা কলেজ

কেএসকে

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।